Bimal Gurung  

একসময় বিজেপি সমর্থন করেছিলেন তিনি। আর সেই বিমল গুরুং-ই অস্বস্তিতে ফেললেন গেরুয়া শিবিরকে। তাও আবার পঞ্চম দফা ভোটের দিনই। পুরোনো সঙ্গীদের নিয়ে ঠিক কী বললেন তিনি?

দার্জিলিংএর পাঁচটি আর কালিম্পংএর একটে আসনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। পাহাড়ে ভোট আর বিমল গুরুং কিছু বলবেন না তাই কখনও হয়? ভোটের দিনেই গোর্খা নেতা বিমল গুরুং বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। তিনি বলেন গত পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে তাঁর সম্প্রদায়ের জন্য কিছুই করেন বিজেপি। বাংলার মানুষও বিজেপিকে সমর্থন করবে না বলেও  সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন গুরুং। তিনি আরও বলেছেন বাংলায় বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। এদিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েই ভোট দেন বিমল গুরুং। 

রাজ্যে পঞ্চম দফা নির্বাচন। পঞ্চম দফা নির্বাচনে ভোটার বিমল গুরুং। সস্ত্রীক ভোট দিলেন গুরুং। পাতলেবাসে ভোট দিলেন তিনি।

কালিম্পং বিধানসভা কেন্দ্র দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই এলাকার রাজনীতি গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ১৯৭৭ সালের পর এখানে বামফ্রন্ট একবারই জিতেছিল, ১৯৮৭ সালে। জিতেছিলেন সিপিআই প্রার্থী। এরপর পরপর তিনবার জিতেছিল জিএনএলএফ, ২০০৬ সালের ভোট পর্যন্ত। ২০১১ ও ২০১৬ সালে এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রার্থী। 

২০১৭ সালের গোড়ায় দার্জিলিংয়ে অশান্তির জেরে হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে তিনজন গ্রেফতার হন সেপ্টেম্বর মাসে। তার কিছুদিন আগেই এই তিনজন ও আরও দুই নেতা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন। গুরুগ্রাম থেকে যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়, তাঁদের অন্যতম পি টি ওলা। তিনি একদা জিটিএ-র সভাসদ ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সিআইডি এই তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল। তারপর রঙ্গিত ও তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে।

১৭ এপ্রিলই পাহাড়ে ভোট। মহা সমস্যায় পড়েছেন তৃণমূল সমর্থকরা। পাহাড়ের তিন কেন্দ্র বন্ধুদের ছেড়েছেন মমতা। কিন্তু, বিমল গুরুং না বিনয় তামাং -  কে মমতার প্রিয়তম বন্ধু?

পাহাড়ের ৩ আসন বিমল গুরুংকে ছেড়েছিলেন মমতা। এদিন প্রার্থী ঘোষণা করলেন গুরুং। বিজেপির সঙ্গে এবার কঠিন লড়াই মানলেন তিনি। তবে তাঁর দিক থেকে মুখ ফেরালো তামাং-রা।

বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে ৭০টিরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। ২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির জন্য শতাধিক মামলা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তবে ইউএপিএ ও হত্যার মামলাগুলি এখনও রয়েছে। ভোটের আগে পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি বার বার ছুটে যেতেন অশান্ত পাহাড়ে। তারপর বার বার বলতেন পাহাড় হাসছে। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে সেই পাহাড়-সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গ তাকে হতাশ করে। বিজেপির কাছে জোর ধাক্কা খায় তৃণমূল।

প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও গরম হয়ে উঠছে পাহাড়ের রাজনীতি। অনিত থাপার পাল্টা রবিবার পথে নামলেন দার্জিলিংএর মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। কার্শিয়াং ডিভিশনের বিমলপন্থীদের পক্ষ থেকে একটি সভার আয়োজন করা হয়। বিমলপন্থীদের তরফ থেকে বলা হয় এটা ঘরে ফেরার সভা। গত সাড়ে তিন বছর ধরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমলপন্থী যেসব নেতারা ঘরে ফিরতে পারেননি তাঁদের ঘরে ফেরাতেই এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিমল গুরুং ও তাঁর ঘনিষ্ট রোশন গিরি। 
 

প্রায় তিন বছর অন্তরালে থাকার পর পাহাড়ে ফিরেছেন বিমল গুরুং। ফিরেই নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে বেশ কয়েকটি জায়গায় জনসভা করেছেন তিনি। অন্যদিকে, চুপচাপ বসে থাকতে রাজি নয় বিনয়পন্থীরা। সব মিলিয়ে পাহাড়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা।

পাহাড়ে ফিরেই বিজেপিকে কার্যত হুঙ্কার দিলেন প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিমল গুরুং। অমিত শাহ, দিলীপ ঘোষকে হুঁশিয়ারি দিলেন আগামী নির্বাচনে সর্বোচ্চ আসন পাবে তৃণমূল। পাশাপাশি, বর্তমান জিটিএ চেয়ারম্যানকেও হুমকি দিলেন গুরুং।

রাজ্যে ভোট এলেই পাহাড়ে গিয়ে গোর্খাল্যান্ড ইস্যু জিইয়ে তোলে বিজেপি। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান একমাত্র তৃণমূল করতে পারে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। 

বিমল গুরুংকে নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। কেননা, প্রাক্তন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন যে, যাঁরা তৃণমূলে মতাদর্শ হিসেবে কাজ করতেন তাঁরাই আজ অবাচ্ছিত। 

দীর্ঘদিন অন্তরালে থাকার পর প্রকাশ্যে এসে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বলেছিলেন বিংল গুরুং। এরপরই, মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিমল গুরুং সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাঙের। নবান্নে এসে কী বললেন বিনয়?