
হিন্দু ধর্মে অনেক গ্রন্থ আছে যেমন মহাভারত, রামায়ণ, শ্রীমদ্ভাগবত ইত্যাদি, কিন্তু এই সবের মধ্যে শ্রীমদ্ভাগবত গীতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীতে গীতা জয়ন্তী উৎসব পালিত হয়। হিন্দু ধর্মে এটিই একমাত্র গ্রন্থ যার জয়ন্তী পালনের প্রথা রয়েছে। এই দিনে শ্রীমদ্ভাগবত গীতা গ্রন্থের বিশেষ পূজা করা হয়। ২০২৬ সালে গীতা জয়ন্তী কবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক এর সঠিক তারিখ এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় তথ্য…
কবে গীতা জয়ন্তী ২০২৬?
মার্গশীর্ষ অর্থাৎ অগ্রহায়ণ মাসের একাদশী তিথি ৩০ নভেম্বর, রবিবার রাত ০৯টা বেজে ২৯ মিনিটে শুরু হবে এবং ১ ডিসেম্বর, সোমবার সন্ধ্যা ০৭টা বেজে ০১ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। যেহেতু একাদশী তিথির সূর্যোদয় ১ ডিসেম্বর হবে, তাই এই দিনেই গীতা জয়ন্তী উৎসব পালিত হবে। এই দিনে মোক্ষদা একাদশীর ব্রতও পালন করা হবে।
কেন গীতা জয়ন্তী পালন করা হয়?
হিন্দু ধর্মে অনেক মহান গ্রন্থ রয়েছে, যার মধ্যে ৪টি বেদ ছাড়াও ১৮টি পুরাণও অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এই সবের মধ্যে শুধুমাত্র শ্রীমদ্ভাগবত গীতারই জয়ন্তী পালিত হয়। এর পেছনে একটি বিশেষ কারণ লুকিয়ে আছে, তা হলো এই সমস্ত গ্রন্থ কোনো না কোনো ঋষি লিখেছেন, কিন্তু গীতাই একমাত্র গ্রন্থ যার উপদেশ স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দিয়েছেন। তাই গীতাকে মহাভারতের মতো মহাসাগর থেকে উদ্ভূত মুক্তাও বলা হয়। গীতা সমগ্র মানবজাতিকে সঠিক পথ দেখায়।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেন গীতার উপদেশ দিয়েছিলেন?
মহাভারত অনুসারে, যখন পাণ্ডব ও কৌরবদের মধ্যে যুদ্ধ নিশ্চিত হয়ে যায় এবং উভয় পক্ষের সেনাবাহিনী মুখোমুখি হয়, তখন নিজের আত্মীয়-স্বজনদের দেখে অর্জুনের মনে বিষাদ জন্মায়, অর্থাৎ তিনি যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেন। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে কর্মের উপদেশ দেন এবং অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত করেন। এই উপদেশ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শুধু অর্জুনকে নয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য দিয়েছিলেন। পণ্ডিতরা মনে করেন যে, গীতার শ্লোকের মধ্যে মানুষের প্রতিটি সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে, শুধু তা বোঝার প্রয়োজন।