অগ্রহায়ণ মাসে প্রচলিত রীতি মেনে নবান্নের নতুন ধান নৈবেদ্য হিসেবে অর্পণ করা হয় দেবী লক্ষ্মীর কাছে। নবান্ন ব্রতের সঙ্গে প্রায় একই নিয়মে পালিত হয় ইতু পুজোও।
'ইতু' প্রধানত সূর্য দেবতার পুজো হলেও এই পুজোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকেন দেবী লক্ষ্মী। এর নেপথ্যে রয়েছে কিছু কারণ।
ইতু পুজোয় যেমন পিঠেপুলি খাওয়ার নিয়ম রয়েছে, তেমনই নবান্ন-র মতো নতুন ফল, নতুন সবজি বা নতুন গুড়, সবই দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
অগ্রহায়ণ সংক্রান্তির দিন বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হয় এই ব্রত। কোথাও আবার গোটা মাস জুড়েই ‘ইতু’ ব্রতর অঙ্গ হিসেবে বিশেষ নিয়ম পালন করতে হয়।
মনে করা হয়, ‘ইতু’ শব্দটা ‘মিতু’ বা ‘মিত্র’ থেকে এসেছে। যা আসলে সূর্যের অপর নাম। তাই ‘ইতু’ বলতে সূর্যদেবকেই বোঝানো হয়।
পুজো হয় অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবার। ব্রতীকে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে থাকতে হয় সারাদিন।
ব্রতে কোনও মূর্তি পুজোর চল নেই। আরাধনা করা হয় মাটির সরাকে। তার সঙ্গে ছোট ছোট ঘট থাকে। এগুলি সূর্যের বাহন ঘোড়ার প্রতীক।
ব্রত কথায় সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও, ‘ইতু’ পুজোর সঙ্গে লক্ষ্মী দেবীর যোগ বেশ পরিলক্ষ্যণীয়।
হিন্দু ধর্মমত অনুযায়ী, সূর্য হল উর্বরা শক্তির আধার। তাঁর দাক্ষিণ্যে প্রকৃতি হয়ে ওঠে সুজলা-সুফলা। বেড়ে ওঠে দেবী লক্ষ্মীর প্রভাব।
ইতুর ব্রত করলে বৃদ্ধি পায় ধনসম্পদ। সংসারে বজায় থাকে সুখ-শান্তি। তাই, সূর্যদেবের আরাধনা হলেও ইতু পুজো যে একদিক থেকে লক্ষ্মী দেবীরও কৃপা-প্রার্থনা, সে কথা বলাই বাহুল্য।