ভগবান জগন্নাথের জন্য রথের নির্মাণ কাজ অনেক মাস আগে থেকে শুরু হয় এবং রথ তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠ একটি সোনার কুড়াল দিয়ে কাটা হয়। আসুন জেনে নিই ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা ও রথ সংক্রান্ত কিছু বিশেষ বিষয়।
প্রতি বছর আষাঢ় মাসে ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা উড়িষ্যার পুরীতে বের করা হয়, যা সারা বিশ্বে বিখ্যাত। তবে শুধু পুরীতেই নয় ভারতের অন্যান্য রাজ্য ও অঞ্চলেও রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। কিন্তু পুরীর মহা রথযাত্রা দেখতে দেশ-বিদেশের মানুষও অংশ নেয়। ভগবান জগন্নাথের জন্য রথের নির্মাণ কাজ অনেক মাস আগে থেকে শুরু হয় এবং রথ তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠ একটি সোনার কুড়াল দিয়ে কাটা হয়। আসুন জেনে নিই ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা ও রথ সংক্রান্ত কিছু বিশেষ বিষয়।
রথ তৈরির নিয়ম-
রথ তৈরি করতে দুই মাস সময় লাগে এবং এই সময়ে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। একটি রথ তৈরি করতে, প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল কাঠ নির্বাচন। রথের জন্য পেরেক বা কাটা কাঠ ব্যবহার করা হয় না। রথের কাঠ সোজা ও খাঁটি হতে হবে। রথ প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত কারিগররাও পুরো ২ মাস সেখানে থাকেন এবং তাদেরও নিয়ম মেনে চলতে হয়।
রথ তৈরির কারিগররা একই সময়ে তারা আমিষ খাবার খেতে পারে না, তাদের খেতে হয় নিরামিষ খাবার। এই সময়ে, কারিগরদের ব্রহ্মচর্য পালন করা বাধ্যতামূলক। সুতক বা পাটকের মতো কারিগরের পরিবারের কোনও সদস্যের সঙ্গে যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তবে সেই কারিগরকে রথ তৈরির কাজ থেকে সরে আসতে হবে।
সোনার কুড়াল দিয়ে রথের কাঠ কাটা হয়
জগন্নাথ রথযাত্রার জন্য রথ তৈরির কাজ শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে। রথ তৈরির জন্য জঙ্গল থেকে কাঠ আনা হয়, যার জন্য মন্দির কমিটির লোকেরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য পাঠায় এবং তারপরে মন্দিরের পুরোহিতরা বনে গিয়ে সেই গাছগুলির পুজো করে যেগুলির কাঠ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। রথটি. পূজার পর সেই গাছগুলো সোনার কুড়াল দিয়ে কাটা হয়। এই কুঠারটি প্রথমে ভগবান জগন্নাথের মূর্তির কাছে স্পর্শ করা হয়। সোনার কুড়াল দিয়ে কাঠ কাটার কাজ মহারানার করা।
এসব গাছের কাঠ রথে ব্যবহার করা হয়
জগন্নাথের রথ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নিম কাঠ। রথযাত্রায় ভগবান জগন্নাথ, তাঁর বড় ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার প্রত্যেকে একটি করে রথ তৈরি করা হয়। এভাবে মোট ৩টি রথ তৈরি হয়। তিনটি রথ নির্মাণের জন্য প্রায় ৮৮৪ টি গাছের ১২ বাই ১২ ফুট কাণ্ডও ব্যবহার করা হয়। এটি থেকে রথের স্তম্ভগুলি তৈরি করা হয়।