
Astro Tips: খাবারের শেষে সুপারির কৌটো খুললেই বাঙালির মন কেমন যেন চনমনে হয়ে যায়। অথচ খুব কম মানুষ জানেন, এই শক্ত খোলসের ভিতরের বাদামটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বহু পুরোনো টোটকা ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাস। মন্দির থেকে গৃহস্থালি—হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুপারির উপস্থিতি নেহাতই চোখে পড়ার মতো। কারণ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মনে করা হয়—সুপারি নাকি সাফল্যের প্রতীক, আর্থিক উন্নতির চাবি এবং বাধা-নাশক শক্তির বাহক।
এই বিশ্বাসের নেপথ্যে যুক্তি যতটা না আছে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানুষের ভাবনা ও আত্মবিশ্বাস। তাই অনেকেই জীবনের কঠিন সময়ে সুপারি-ভিত্তিক কিছু বিশেষ রীতি পালন করেন। দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কীভাবে কাজ করে।
অর্থভাগ্য উজ্জ্বল করতে গণেশের সামনে অর্পণ:-
অনেকে দেখবেন, নতুন ব্যবসা শুরু, নতুন ব্যাগে টাকা রাখা বা ধনসম্পর্কিত কোনো কাজের আগে সুপারি গণেশের পায়ের কাছে রাখা হয়। এর ব্যাখ্যা হল—গণেশকে বাধা দূর করার প্রতীক হিসেবে মানা হয়, আর সুপারিকে মনে করা হয় স্থিতিশীলতার পরিচয়।
অনেকে পুজোর পর ব্যবহৃত সুপারিটি লাল ও হলুদ রঙের কাপড়ে জড়িয়ে যেখানে টাকা রাখা হয় সেখানে রেখে দেন। বিশ্বাস, অর্থের প্রবাহ নাকি ধীরে ধীরে মসৃণ হয়।
চাকরি বা ব্যবসার অগ্রগতির জন্য শনিবারের বিশেষ নিয়ম:-
অনেকেই বলেন, সপ্তাহের সবচেয়ে শক্তিশালী সন্ধ্যা নাকি শনিবারের সূর্যাস্তের পর। সেই সময় অশ্বত্থ গাছের নীচে প্রদীপ জ্বালানো হয়। আলো যেখানে পড়ে, সেখানে সুপারি আর ছোট একটি কয়েন রাখা হয়।
গাছের নিচে রাতভর রেখে পরের দিন ভোরে সেটি সংগ্রহ করে পাতা সহ নিজের কাছে রাখলে কাজের ক্ষেত্রের অচলাবস্থা কাটে—এটাই প্রচলিত বিশ্বাস।
গুরুত্বপূর্ণ দিনে সৌভাগ্য বাড়াতে লাল কাপড়ের পুঁটলি:-
অনেকে বড় কোনো সাক্ষাৎকার, দর-কষাকষি বা ঝুঁকির কাজে বেরোনোর আগে সুপারি ও লবঙ্গ লাল কাপড়ে গুছিয়ে রাখেন। আগের দিন দেবতার সামনে রেখে পরদিন সঙ্গে নিলে মন স্থির থাকে, সফলতার সম্ভাবনাও নাকি বাড়ে।
একটানা বাধা এলে পানপাতার বিশেষ আচার:-
কোনো পরিকল্পনা যেন শেষ হলেই আটকে যায়—এমন অনেকে মঙ্গলবারকে বেছে নেন। পানপাতায় সিঁদুর-ঘিয়ে তৈরি চিহ্ন আঁকা হয়। তার মাঝখানে সুপারি রেখে সেটি দেবতার সামনে রাখা হয়।
পরের দিন পুজোর পরে কাপড়ে জড়িয়ে সঙ্গে রাখলে বাধা কমে বলে বহু মানুষ মনে করেন।
বিয়ে নিয়ে দেরি বা বাধা? পূর্ণিমার আলোর রীতি:-
সম্পর্ক স্থির না হলে বা বারবার পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে সিঁদুর মাখানো একটি সুপারি রুপোলি বাক্সে রেখে পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় রাখা হয়।
বিশ্বাস—চন্দ্রালোকে রাখা এই আচার শুভ প্রভাব আনে এবং বিয়ের পথ সহজ করে।
সুপারি নিয়ে এসব আচার মূলত আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের অংশ। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হয়তো কম, কিন্তু মানুষের মনে ইতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করতে পারে—এটাই এর আসল মূল্য। ছেলে-বুড়ো সবার জীবনেই কখনও না কখনও কিছু নির্ভরতা প্রয়োজন হয়—সুপারির টোটকা সেই মানসিক জোরটুকুই জোগায়।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।