ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের তথ্য থেকে শুরু করে শাস্ত্রে বর্ণিত চেহারা, সর্বত্র কালো গাঢ় কালো অন্ধকারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন কেন?
শ্রী কালিকা ঘন কালো মেঘের বর্ণে বর্ণিত। ভগবতী কালীকার আবির্ভাব বিভিন্ন তন্ত্র ও শাস্ত্রে বর্ণিত হয়েছে। এটি তাঁর মহাননির্বাণ তন্ত্রে বর্ণিত চেহারা। বিভিন্ন শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে শক্তির দুটি প্রধান রূপ রয়েছে, একটি কালো বর্ণের, অন্যটি লাল।
কৃষ্ণবর্ণ রূপ কালীর।
লাল হলেন ললিতা।
কালো রঙে যেমন সমস্ত রঙ দ্রবীভূত হয়, তেমনি সমস্ত নাম, রূপ এবং বিশ্বজগত কালীর মধ্যে দ্রবীভূত হয়।
এটাও বলা হয়ে থাকে যে, কালী হলেন সবচেয়ে উজ্জ্বল, যাঁকে আমরা দেখতে অক্ষম, এবং যখন আমরা কিছু দেখতে পাই না, তখন আমরা কেবল অন্ধকার দেখতে পাই।
ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলেছেন যে, যেমন একটি হ্রদের জল দূর থেকে কালো দেখায়, কিন্তু কাছে গেলে আমরা দেখতে পাই যে, এটি বর্ণহীন, ঠিক তেমনই, আমরা শুরুতে কালীর গায়ের বর্ণকে কালো বলে ধরে নিই, পরে আমরা তার সম্পর্কে পরিষ্কার জানতে পারি। সত্য নির্গুণ নিরাকার রূপ।
অন্য আরেকটি মতে, ভগবতী দেবী কালিকা কালো, কারণ তিনি সেই শূন্যতা, যা সৃষ্টির আগে ছিল এবং মহাপ্রলয়ের পরেও থাকবে। তিনি অন্ধকার, কারণ তিনি নিজের মধ্যে সবকিছু শোষণ করেন।
-
আবার, আলোকবিজ্ঞানের মতে কালো কোনও পৃথক রঙ নয়। সকল রঙের মিশ্রণ বা সব রঙ একত্রে শোষিত হলে কালো দেখায়। তাই, অনন্ত মহাকাশ কৃষ্ণবর্ণের হয়ে থাকে। ফলে কালো রঙ হল, অনন্তের প্রতীক।
দেবী কালীও প্রলয়কালে সমস্ত জগত নিজের মধ্যে বিলীন করে নিয়েছিলেন, তাই তিনি কৃষ্ণবর্ণা। তিনি ব্রহ্মময়ী- তিনি গুণাতীতা হয়েও গুণময়ী।
দেবীর কালো মুক্তকেশও থাকে। তাঁর এই রূপ হল বৈরাগ্যের প্রতীক। তিনি হলেন, চির বৈরাগ্যময়ী দেবী।
দেবীর গায়ের রং কালো। আবার কখনও কখনও কালীর গায়ের রং নীলও হয়ে থাকে। নীল রং হওয়ার কারণ হল, কখনও কখনও তাঁকে আকাশের মতোই অসীম ভাবা হয়।
Kali Puja 2023: মানুষের কাটা মাথা! কেন সেই মুণ্ডের মালাই শোভা পায় মা কালীর গলায়?
Kali on Shiva: কেন দেবাদিদেব মহাদেবের বুকের ওপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন মা কালী?
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।