মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বন্দনা হয় এই দেবীর, জেনে নিন বসন্ত পঞ্চমীর প্রচলনের কথা

  • মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে পূজিত হন এই দেবী
  • এই তিথি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত
  • এই দিন শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথাও প্রচলিত
  • প্রাচীন কালে তান্ত্রিক সাধকেরা দেবীর আরেক রূপ বাগেশ্বরীর পুজো করতেন

deblina dey | Published : Jan 19, 2020 4:01 AM IST

সরস্বতী পুজো বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠেয় একটি অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পুজো আয়োজিত হয়। তিথিটি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। উত্তর ভারত, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, নেপাল ও বাংলাদেশে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ছাত্রছাত্রীদের গৃহ ও সর্বজনীন পূজামণ্ডপে দেবী সরস্বতীর পুজো করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিন শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথাও প্রচলিত। পুজোর দিন সন্ধ্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বজনীন পুজো মণ্ডপগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয়। 

আরও পড়ুন- মাঘ মাস কেমন প্রভাব ফেলবে মেষ রাশির উপর

সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পুজো বর্তমান রূপটি আধুনিক কালে প্রচলিত হয়েছে। তবে প্রাচীন কালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী দেবীর আরেক রূপ বাগেশ্বরীর পুজো করতেন। ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতি মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে ধোয়া চৌকির উপর তালপাতার তাড়ি ও দোয়াতকলম রেখে পুজো করার প্রথা ছিল। শ্রীপঞ্চমী তিথিতে ছাত্রেরা বাড়িতে বাংলা বা সংস্কৃত গ্রন্থ, শ্লেট, দোয়াত ও কলমে দেবী সরস্বতীর পুজো করত। গ্রামাঞ্চলে এই প্রথা বিংশ শতাব্দীতেও প্রচলিত ছিল। শহরে ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই সরস্বতীর প্রতিমা নির্মাণ করে পুজোর প্রচলন শুরু করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সরস্বতী পুজোর প্রচলন শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে।

আরও পড়ুন- রবিবার কেমন কাটবে আপনার, দেখে নিন আজকের রাশিফল

শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পুজো সম্পন্ন করা যায়। সরস্বতীর পুজো সাধারণ পূজার নিয়মানুসারেই হয়। তবে এই পুজোয় কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। যথা অভ্র-আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম ও যবের শিষ। পুজোর জন্য বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুলও প্রয়োজন হয়। লোকাঁচার অনুসারে, ছাত্রছাত্রীরা পুজোর আগে কুল না খাওয়ার রীতি প্রচলিত। এমনকি পুজোর দিন কিছু লেখাও নিষিদ্ধ। যথাবিহিত পুজোর পর লক্ষ্মী, নারায়ণ, দোয়াত-কলম, পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রেরও পুজো করার প্রথা প্রচলিত আছে। এই দিন ছোটোদের হাতেখড়ি দিয়ে পাঠ্যজীবন শুরু হয়। পুজোর শেষে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার প্রথাটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের দল বেঁধে অঞ্জলি দিতে দেখা যায়। পুজোর পরদিন পুনরায় পুজোর পর চিড়ে ও দই মিশ্রিত করে দধিকরম্ব বা দধিকর্মা নিবেদন করা হয়। এরপর পুজো সমাপ্ত হয়। সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। মাঘ মাসের চতুর্থীতে আয়োজিত হয় গণেশবন্দনাও। ১৪২৬ বাংলা সালে এই গণেশ বন্দনার হবে ২৮ জানুয়ারি। দেবী সরস্বতীর বন্দনা অনুষ্ঠিত হবে বাংলার ১৫ মাঘ ১৪২৬, ইংরেজি ৩০ জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার।

Share this article
click me!