নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ন টিউব দিয়ে জরায়ুতে চলে আসে এবং ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের এন্ডমেট্রিয়াম স্তরে ভেঙ্গে পড়ে শরীরের বাইরে নির্গত হয়। তাই নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে আমাদের দেশে মেয়েদের এই সাধারণ বিষয়টি নিয়ে বহু কুসংষ্কার এখনও বর্তমান।
হিন্দুধর্মকে বলা হয় পৃথিবীর প্রাচীনতম ধর্ম। পন্ডিতরা হিন্দুধর্মকে বিভিন্ন ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ এবং সংশ্লেষণ হিসেবে গন্য করেন যার মূলে রয়েছে একাধিক উৎপত্তির উৎস। ভারতীয় উপমহাদেশের একাধিক স্থানীয় ধর্মমত একত্রে হিন্দুধর্ম নামে পরিচিত। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে, লৌহযুগ থেকে ঘটতে থাকা ভারতের ধর্মবিশ্বাসের নানা বিবর্তন এই ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই সনাতন ধর্ম মতে, শুচি হয়েই সমস্ত পুজোর কাজ করতে হয় মেয়েদের। যে কোনও অশৌচ ও রজস্বলা অবস্থায় পুজোর কোনও কাজ করা যায় না এমনটাই শোনা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই।
সেই জন্য ব্রতী অবস্থায় নখ, চুল ও দাড়ি কাটা নিষিদ্ধ হয়। যে কোনও মাঙ্গলিক কাজে সংকল্প করে বরণ হয়ে যাওয়ার পরে শুভ অশৌচ, মরণাশৌচ বা নারী রজস্বলা হলে মাঙ্গলিক কাজে অংশ নেওয়া যেতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, রজস্বলা অবস্থায় পুষ্পাঞ্জলি দিতে বাধা থাকলেও, সেই অবস্থায় অপর কোনও ব্যক্তি তার নামে পুজো দিয়ে দিতে পারেন। এমনকি কোনও মহিলা যদি মাঙ্গলিক কাজের সংকল্পের পর রজস্বলা হন, সে ক্ষেত্রেও তিনি সেই ব্রত পালন করতে পারবেন। এর কারণ মানুষ অশুচি হয় দেহে, মনে নয়। সনাতন ধর্ম মতে, ঈশ্বরকে স্মরণ করতে প্রয়োজন মনের শুচি, পবিত্র মনে ঈশ্বর স্মরণ করলেই সম্পন্ন হয় পুজোর সংকল্প, দেহের শুচিতা সে ক্ষেত্রে প্রাধান্য় পায় না।