
ভারতের বৃহত্তম অটোমোবাইল কোম্পানি মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া লিমিটেড একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক অতিক্রম করেছে। কোম্পানিটি দেশে ৩০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩ কোটি যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি করার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। এই সাফল্যের সাথে, মারুতি সুজুকি অভ্যন্তরীণ বাজারে এই মাইলফলক অতিক্রমকারী প্রথম ভারতীয় গাড়ি নির্মাতা হয়ে উঠেছে। কোম্পানি জানিয়েছে যে তারা মাত্র ৪২ বছরের মধ্যে এই মাইলফলক অতিক্রম করেছে। ১৯৮৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর, মারুতি সুজুকি তার প্রথম গাড়ি, মারুতি ৮০০, ভারতের একজন গ্রাহকের কাছে হস্তান্তর করে। তারপর থেকে, কোম্পানিটি সমস্ত শ্রেণীর গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে গেছে।
মারুতি সুজুকির এই ইতিহাস তিনটি ধাপে তৈরি হয়েছে। মারুতি প্রথম ১০ মিলিয়ন গাড়ি বিক্রি করতে সময় নেয় ২৮ বছর এবং দুই মাস, অর্থাৎ ১৯৮৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় এক কোটি গাড়ি বিক্রি করতে সময় লাগে মাত্র সাত বছর এবং পাঁচ মাস, অর্থাৎ ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। তৃতীয় এক কোটি গাড়ি বিক্রির রেকর্ডটি মাত্র ছয় বছর এবং চার মাসে অর্জিত হয়েছে, অর্থাৎ ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেল
কোম্পানি জানিয়েছে যে মারুতির সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া তিনটি গাড়ি হল অল্টো, ওয়াগন আর এবং সুইফট। এই মডেলগুলি মারুতির বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। বর্তমানে, কোম্পানির ১৯টি মডেল এবং ১৭০টি ভ্যারিয়েন্টের একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও রয়েছে, যা প্রতিটি গ্রাহকের চাহিদা এবং বাজেট অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে। কোম্পানি অল্টোর ৪.৭ মিলিয়ন ইউনিট, ওয়াগন আর-এর ৩.১ মিলিয়ন ইউনিট এবং সুইফটের ২.৯ মিলিয়ন ইউনিট বিক্রি করেছে।
কোম্পানির প্রতিক্রিয়া
এই কৃতিত্ব সম্পর্কে মারুতি সুজুকির এমডি এবং সিইও হিসাশি টাকেউচি বলেন, তিন কোটি গ্রাহকের বিশ্বাসই তাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। তিনি আরও বলেন যে তাদের লক্ষ্য হল ভারতের প্রতিটি বাড়িতে পরিবহণের আনন্দ পৌঁছে দেওয়া এবং এই সাফল্য তাদের গ্রাহক, কর্মচারী, ডিলার এবং সরবরাহকারী অংশীদারদের কঠোর পরিশ্রম এবং বিশ্বাসের ফল। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে কোম্পানি নতুন প্রযুক্তি, স্থিতিশীল গতিশীলতা এবং স্থানীয় উৎপাদনের উপর আরও বেশি মনোযোগ দেবে।
গাড়ির বাজারে মারুতির ভূমিকা
সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম) অনুসারে, ভারতে এখনও প্রতি ১,০০০ জনের জন্য মাত্র ৩৩টি গাড়ি রয়েছে। ফলস্বরূপ, বৃদ্ধির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। মারুতি সুজুকির এই মাইলফলক শুধুমাত্র কোম্পানির জন্যই নয়, ভারতের অটোমোবাইল সেক্টরের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন, যা দেশের ক্রমবর্ধমান গ্রাহক চাহিদা এবং অর্থনৈতিক শক্তিকে প্রতিফলিত করে।