বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভি বলেছেন, ভারতে যদি একজনও অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিক থেকে থাকে, তাদের আমরা ফেরত নেব। কিন্তু ভারত সরকারকে তার নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। মঙ্গলবার কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে বিজয় দিবস উপলক্ষে এই মন্তব্য করেন রিজভি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। অসম, বাংলা দিল্লিতে হিংসাত্বক রূপ নিয়েছে প্রতিবাদ। যার জেরে ভারত সফর বাতিল করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন রিজভিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিকত্ব পঞ্জি (এনআরসি) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু তারপরও বলব যে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন এটা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমিও মনে করি এই বিষয়ে বাংলাদেশে কোনও প্রভাব পড়বে না।
অনেকেই বলছেন এখানে অনেক অবৈধ বাংলাদেশিরা আছে। কিন্তু ভারত সরকার থেকে কেউ বলেনি যে কজন অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে আছে। তাদের তালিকায় কোন কোন অবৈধ বাংলাদেশিদের নাম আছে। আমাদের নীতি একবারে পরিষ্কার, যদি কোন বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে ভারতবর্ষে থেকে থাকে, তাহলে আমরা তাকে ফিরিয়ে নেব। কিন্তু ভারত সরকারকে তার প্রমাণ দিতে হবে যে ওরা আমাদের দেশের নাগরিক।
এনআরসি বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেও মনে করেন রিজভি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কোনও একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক বদলাবে না। বাংলাদেশ মুক্তি যোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনারা হাতে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। ভারতীয় সেনা তাদের রক্ত দিয়েছে। পৃথিবীতে খুব কম এ রকম উদাহরণ রয়েছে যেখানে একটা বিদেশি দেশের সেনাবাহিনী অন্য দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে।
রিজভির অভিমত, বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। অতীতে দুই একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু গত ১৫ বছরে বিশেষ করে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়। আমাদের দেশে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ কোনও বিভেদ নেই, সবাই একসঙ্গে বাস করেন।