ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার প্রবণতা বাড়ছে। অন্তত এমনই তথ্য উঠে আসছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে। এই পরিসংখ্যানে যে সময়ের তথ্য উঠে এসেছে, তখন অসমে পুরোদমে এনআরসি-র কাজ চলছে। যদিও সেই সময় নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কাজ শুরু হয়নি।
এনসিআরবি-র সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ভারত থেকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় মোট ১৮০০ জনকে গ্রেফতার করেছিল বিএসএফ। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যাটাই বেড়ে হয়েছে ২৯৭১।
যাঁরা বাংলাদেশে বেআইনিভাবে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু এবং মহিলা। ২০১৮ সালের এনসিআরবি রেকর্ড অনুযায়ী, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফ- এর হাতে ধৃত মোট ২৯৭১ জনের মধ্যে ১৫৩২ জন পুরুষ, ৭৪৯ জন মহিলা এবং ৬৯০ জন শিশু রয়েছে।
আবার উল্টো দিকে বাংলাদেশ থেকে চোরা পথে ভারতে ঢোকার প্রবণতা সামান্য হলেও হ্রাস পেয়েছে। ২০১৭ সালে যেখানে ভারতে বেআইনিভাবে ঢুকতে গিয়ে ১১৮০ জন গ্রেফতার হয়েছিলেন, সেখানে ২০১৮ সালে গ্রেফতার হয়েছেন ১১১৮ জন। পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং মেঘালয় বরাবর থাকা বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফ এঁদেরকে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন- নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি-র প্রয়োজন ছিল না, মনে করেন শেখ হাসিনা
আরও পড়ুন- হিন্দুদের আন্দোলনের চাপে পিছিয়ে গেল নির্বাচন, ভোট হচ্ছে না সরস্বতীপুজোর দিন
অসমে এনআরসি-র প্রথম খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই। সেই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছিল চল্লিশ লক্ষ মানুষের নাম। এর পর ওই বছরই ৩১ অগাস্ট এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ যায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। এঁদের একটা বড় অংশই বেআইনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে মনে করা হয়েছিল। ভারতের নাগরিকত্ব চলে যাওয়ার পর তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন, এমন আশঙ্কা ছিলই। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রেকর্ড-এ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের যে প্রবণতা উঠে এসেছে, তাতেও সেই সম্ভাবনাই আরও জোরাল হয়েছে।
শুধু এনসিআরবি-র তথ্যই নয়, চলতি মাসের শুরুতেই বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড-এর ডিজি মেজর জেনারেল মহম্মদ শাফিনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ভারত থেকে বেআইনিভাবে প্রবেশের সময় ৪৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।