বৃদ্ধার কাঁধ প্রতিস্থাপন বর্ধমান মেডিক্যালে, বিনামূল্যে সাত লাখের জটিল অস্ত্রোপচার

  • বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে প্রথমবার কাঁধের প্রতিস্থাপন
  • গোটা দেশেই এখনও সেভাবে চালু হয়নি এই অস্ত্রোপচার
  • বিনামূল্যে ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
  • চিকিৎসকদের ভূমিকায় খুশি পরিবার
     

debamoy ghosh | Published : Jan 24, 2020 8:48 PM IST

হাঁটু বা কোমর প্রতিস্থাপনের কথা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু এখনও কাঁধ প্রতিস্থাপন চালু হয়নি এ দেশে। গোটা দেশে সারা বছরে মাত্র পাঁচ থেকে দশটি এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়। এবার সেই তালিকায় নাম যোগ হলো বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক বৃদ্ধের কাঁধ প্রতিস্থাপিত করলেন সরকারি এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। মুম্বাই বা দক্ষিণ ভারতে যে অস্ত্রোপচার করাতে গেলে পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকা খরচ, সেই জটিল অস্ত্রোপচারের প্রায় পুরোটাই বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করল হাসপাতাল। 

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের  সুপার স্পেশালিটি বিভাগ অনাময়ে এই প্রথম নিখরচায় হল সোলডার রিপ্লেসমেন্ট । পূর্ব বর্ধমানের মেমারির নুদিপুরের প্রৌড়া সাবিত্রী কর্মকার। মাস দেড়েক আগে  বাড়িতে পড়ে গিয়ে বাঁ হাতের কাঁধে মারাত্মক চোট পান। তাঁকে বর্ধমানের অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক্স রে করে দেখা যায় তাঁর বাঁ দিকের কাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। ওই রোগিণীর কাঁধ এমনভাবেই ভেঙেছিল যে অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন, সাবিত্রীদেবীর কাঁধ প্রতিস্থাপন করতে হবে। 

আরও পড়ুন- খাদ্যনালিতে বিঁধে সূচ, জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচালেন বাঁকুড়ার চিকিৎসকরা

একদিকে সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে এই অস্ত্রোপচার করা যেমন চ্যালেঞ্জ ছিল, সেরকমই এই অস্ত্রোপচারের খরচও বিপুল। ওই রোগিণীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেও সেখান থেকে পাওয়া অর্থ পর্যাপ্ত ছিল না। তাই হাসপাতালের তরফে সরকারি তহবিল থেকে কাঁধ প্রতিস্থাপনের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কারণ ওই রোগিণীর পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার এই বিপুল খরচ বহন করা সম্ভব ছিল না। 

আর্থিক সমস্যা মেটানোর পাশাপাশি জটিল অস্ত্রোপচারের আগে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সঙ্গে কথা বলেন অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসকরা। অর্থোপেডিক সার্জন বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, বিভাগীয় প্রধান দেবদত্ত চট্টোপাধ্যায়,  সবমিলিয়ে সাত থেকে আটজনের চিকিৎসকের একটি দলকে এই অস্ত্রপচারের জন্য বেছে নেওয়া হয়। 

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এত বড় অস্ত্রোপচারকে সফল করে তুলতে হাসপাতালের নার্স থেকে থেকে শুরু করে সাফাই কর্মী, প্রত্যেকেই চেষ্টা করেছেন। জটিল এবং দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের জন্য জন্য তৈরি করা হয়েছে হাসপাতালের ওটি-কে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পয়ষট্টি বছরের সাবিত্রীদেবী এখন ভাল আছেন। 

সাবিত্রীদেবীর পুত্রবধূ চাপা কর্মকার বলেন, 'আমরা খুবই গরিব। ফলে এত বড় অস্ত্রোপচার করানোর সামর্থ্য আমাদের ছিল না। কিন্তু প্রথম থেকেই ডাক্তারবাবু থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীরা সবাই আমাদের উৎসাহ দিয়ে বলেছেন যে শাশুড়ি মা সুস্থ হয়ে যাবেন। ওনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।'

Share this article
click me!