
প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) কেবল একজন কর্মজীবী ব্যক্তির জীবনের সঞ্চয়ের একটি বড় অংশই নয়, বরং এটি বার্ধক্যের জন্য ভরসা হিসেবেও মনে করা হয়। তবে, প্রায়শই দেখা যায় যে কর্মচারীদের তাদের পিএফ অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত ছোটখাটো সমস্যার জন্যও অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। কখনও কখনও এটি কেওয়াইসি সমস্যা, কখনও কখনও নাম সংশোধন করার ঝামেলা। যদি আপনিও একই ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হন, তাহলে আপনার জন্য কিছু খুব আশ্বস্তকারী খবর রয়েছে। কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (ইপিএফও) এখন ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছে আসছে। ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে, ইপিএফও একটি বিশেষ প্রচার শুরু করছে যা লক্ষ লক্ষ অ্যাকাউন্টধারীদের সরাসরি উপকৃত করবে।
ইপিএফও তার উদ্যোগ, নিধি ২.০ ঘোষণা করেছে, এটি কেবল একটি সরকারি কর্মসূচি নয়, বরং "আজাদি কা অমৃত মহোৎসব" এর অধীনে একটি অংশগ্রহণমূলক প্রচার হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২৭ নভেম্বর দেশের সকল জেলায় এই কর্মসূচি আয়োজন করা হবে।
প্রায়শই অনলাইন অভিযোগগুলিও সমাধান করতে সময় লাগে। তাই, এই শিবিরের মাধ্যমে, পিএফ সদস্য, পেনশনভোগী এবং এমনকি নিয়োগকর্তারাও একই ছাদের নীচে তাদের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবেন। ইপিএফও, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোনও অভিযোগ থাকলে গ্রাহকদের সরাসরি শিবিরে আসা উচিত। এটি কেবল সন্দেহ দূর করবে না বরং ইপিএফওর নতুন স্কিম এবং পরিষেবা সম্পর্কে সচেতনতাও ছড়িয়ে দেবে। যারা প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে তাদের পিএফ তহবিল আটকে আছেন তাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ।
পিএফ অ্যাকাউন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল পেনশন, যা নিয়ে কর্মীদের অনেক প্রশ্ন থাকে। ইপিএফওর নিয়ম অনুসারে, এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে পেনশনের জন্য যোগ্য হওয়ার জন্য ন্যূনতম ১০ বছরের চাকরি এবং অবদান প্রয়োজন। যদি কোনও কর্মচারী টানা ১০ বছর ধরে ইপিএফওতে অবদান রেখে থাকেন, তবে তিনি ইপিএস পেনশনের জন্য যোগ্য হন।
তবে, একটি উল্লেখযোগ্য বয়সসীমা রয়েছে। সাধারণত, এই পেনশন ৫৮ বছর বয়সে শুরু হয়। তবে, যদি কেউ তীব্র আর্থিক সংকটে থাকেন অথবা তাড়াতাড়ি অবসর গ্রহণ করেন, তাহলে তারা ৫০ বছর বয়সের পরেও পেনশনের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে তাড়াতাড়ি পেনশনের ফলে পেনশনের পরিমাণ হ্রাস পাবে।
ইপিএফও সম্প্রতি তার বিধানগুলিতে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করেছে, যা সরাসরি আপনার আর্থিক এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলবে। পূর্বে, যদি কোনও ব্যক্তি চাকরি ছেড়ে বেকার হয়ে পড়েন, তাহলে তারা অল্প সময়ের পরে তাদের জমা হওয়া ইপিএস তহবিল উত্তোলন করতে পারতেন। কিন্তু এখন নিয়ম কঠোর করা হয়েছে।
নতুন বিধান অনুসারে, যদি কোনও ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে বেকার থাকেন, তাহলে তারা দুই মাস পরে তাদের পেনশন (ইপিএস) অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন না। এখন তাদের ৩৬ মাস বা তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে। সরকারের যুক্তি হল যে কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সহজ কথায়, সরকার চায় আপনি আপনার পেনশনের অর্থ মাঝামাঝি সময়ে ব্যয় করা এড়ান, যাতে বৃদ্ধ বয়সে আপনার একটি নিরাপদ আমানত থাকে। যারা চাকরি হারানোর পর পিএফ তহবিলের উপর নির্ভর করতেন তাদের জন্য এই নিয়মটি একটু বিরক্তিকর হতে পারে, তবে ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।