মূল্যবৃদ্ধির প্রশ্নে কেন্দ্রকে ফের তোপ দাগছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কটাক্ষের সুরে বলেছেন এটাই কি তাহলে আচ্ছে দিনের নমুনা।
একদিকে যখন অগ্নিমূল্য সবজী বাজার, হাত পুড়ছে পেট্রলের বর্ধিত দামে তখন আরও চাপ পড়ার আশঙ্কা মধ্যবিত্তের পকেটে। এবারের চাপ সৃষ্টি করতে কোমড় বেঁধে ময়দানে নামছে টেক্সটাইল(textile) ও ফুটওয়ার(Footwear) বিভাগ। নতুন বছরের শুরুতে(New Year)ই গোঁদের ওপর বিষফোঁড়ার মত কাজ করবে জিএসটি বৃদ্ধির হার(GST Increases)। জামাকাপড়(Garments), টেক্সটাইল(Textile) ও জুতোর(Footwear) ওপর একলাফে গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স(GST) বা জিএসটি ৫ শতাংশ(5%) থেকে বেড়ে হতে চলেছে ১২ শতাংশ(12%)। সুতরাং বেশ অনেকটাই মহার্ঘ হচ্ছে জামাকাপড়, জুতোর মত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো। এই ধরনের জিনিসের ওপর যখন কেন্দ্রের তরফে জিএসটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই চাপ পড়ে মধ্যবিত্তের পকেটে। ১৮ নভেম্বর দ্য সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস বা CBIC-র তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকেই বেশ অনেকটাই দামী হতে চলেছে জামাকাপড়, টেক্সটাইল ও জুতো। হাজার টাকার কম দামের তৈরি পোশাক এবং বস্ত্র শিল্পের বিভিন্ন পণ্যে জিএসটি-র হার বৃদ্ধি নিয়ে দানা বাঁধছে অসন্তোষ আর ক্ষোভ। দ্রুত সিদ্ধান্ত ফেরাতে বলছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা। তাদের সংগঠন রিটেল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (Retail association Of India) দাবি, তা না-হলে ওই শিল্প পুরো ভেঙে পড়তে পারে। মূল্যবৃদ্ধির প্রশ্নে কেন্দ্রকে ফের তোপ দাগছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর(Rahul Gandhi) কটাক্ষের সুরে বলেছেন, জিএসটি-তে হয়েছে ১৪০% বিকাশ, এটাই কি তাহলে আচ্ছে দিনের নমুনা(exposure of Good Days Continues)।
দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার(Priyanka gandhi Bhadra) মন্তব্য, গমের আটা, মোবাইল ডেটা, জীবন বিমা থেকে শুরু করে জামাকাপড়, জুতো, আনাজ ও ডাল সবই মহার্ঘ হয়ে উঠছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, নিত্য ব্যবহারের পণ্যের আকাশছোঁয়া দামে ভুগছেন দেশের সাধারণ মানুষ। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন(Nirmala sitaraman), সব রাজ্যের সরকার এবং জিএসটি পরিষদকে সস্তার পোশাকে কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছে আরএআই। সংগঠনের দাবি, করোনায় এমনিতেই কাহিল বস্ত্র শিল্পের ৮৫% এর জেরে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষুব্ধ পোশাক ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর ফলে সস্তার পোশাক দামি হবে। দুর্ভোগ বাড়বে গরিব এবং সাধারণ রোজগেরেদের। চাহিদায় ধাক্কা লাগায় মার খাবেন ব্যবসায়ীরা। বস্ত্র এবং অন্যান্য কিছু পণ্যের উপরে বর্ধিত জিএসটি নিয়ে ক্ষোভ উগরে রাহুলের অভিযোগ, কেন্দ্র গোটা দেশের মনযোগ বাস্তবের সব থেকে বড় সমস্যা পণ্যের দাম বৃদ্ধি থেকে সরিয়ে জাত-পাত, ধর্মের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। টুইটে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের কথাও বলেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, দাম বৃদ্ধির জেরে চাহিদা কমলে ফের ভুগবে ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি।
আরও পড়ুন-GST-মহার্ঘ হচ্ছে জামাকাপড়, জুতো,নতুন বছরে GST বাড়ছে ১২ শতাংশ
১০০০ টাকা পর্যন্ত দামের তৈরি জামাকাপড় ছাড়াও কিছু বিশেষ ধরনের বস্ত্র এবং কৃত্রিম ভাবে তৈরি সুতোয় কর ৫% থেকে বাড়িয়ে ১২% করেছে জিএসটি পরিষদ। ১ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হবে। আপত্তি উঠেছে মন্ত্রিগোষ্ঠীর কাছে ফিটমেন্ট কমিটি নিত্য ব্যবহার্য বেশ কিছু পণ্যে জিএসটি ৫% থেকে বাড়িয়ে ৭% করার সুপারিশ করায়। ১৮% করের ধাপকে ২০ শতাংশের শ্রেণির মধ্যে মেশাতে বলেছে তারা। চা-কফি, চিঁড়ে, মুড়ি, খইয়ে কর বসানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এ সবের প্রতিবাদ জানাচ্ছে শিল্প সংগঠনগুলি। গত শনিবার জিএসটি পরিষদের মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে এই সুপারিশের বিরুদ্ধে আপত্তি জানায় রাজ্য।