
কলেজে ভর্তি হলেও অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর বেশিরভাগ কলেজেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। অনেকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই সময়ে শিক্ষা ঋণ গ্রহণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অনেকে মনে করেন শিক্ষা ঋণ নেওয়া, পরিশোধ করা, ঋণ পরিচালনা করা ইত্যাদি কঠিন কাজ। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি মনে রেখে কাজ করলে শিক্ষা ঋণ সহজেই পরিচালনা করা যায়। একাধিক ব্যাংকের ঋণের বিবরণ এবং বিভিন্ন পরিশোধের নিয়ম জেনে নেওয়া এবং পরিকল্পনা করে কাজ করলে শিক্ষা ঋণে অনেক টাকা ব্যয় কমানো যায়।
সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার কিছু আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পগুলি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এরকম একটি প্রকল্প হল প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যালক্ষ্মী শিক্ষা ঋণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩১ সালের মধ্যে ৩,৬০০ কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে শিক্ষার্থীদের www.vidyalakshmi.co.in ওয়েবসাইটে লগইন করে নিবন্ধন করতে হবে এবং আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
যারা অন্য কোন সরকারি প্রকল্প থেকে সাহায্য পান না, তারা এই প্রকল্পের আওতায় ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। পারিবারিক বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে শিক্ষার্থীরা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। এই প্রকল্পের আওতায় ৩% সুদের ছাড় পাওয়া যায়। বিদ্যালক্ষ্মী শিক্ষা ঋণের সুদের হার ব্যাংক ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
প্রথমে আপনার শিক্ষা ঋণের জন্য কিছু মৌলিক আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে। ঋণ পরিচালনার অ্যাপ্লিকেশন (Loan Management Application) এবং ঋণের মেয়াদ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ঋণের জন্য পুরোপুরি দায়ী আপনি হিসেবে পড়াশোনার সময় কলেজে দায়িত্বের সাথে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে হবে।
কলেজের পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর চাকরির জন্য আবেদন করার চেষ্টা জোরদার করতে হবে। অনেকে ঋণ নিয়ে পড়াশোনা করার কথা ভুলে যান। উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করলে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় আর্থিক বোঝা বাড়বে। ঋণ সঠিক সময়ে পরিশোধ করে জরিমানা এড়াতে হবে এবং নিজের ও অভিভাবকদের মানসিক চাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
ঋণের কিস্তি সময়মত পরিশোধ না করলে আপনার ক্রেডিট স্কোর কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে ভবিষ্যতে বিয়ে, গাড়ি বা বাড়ির ঋণ নেওয়ার সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। চাকরি পাওয়ার পর বাইক, মোবাইল কেনার আগে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে ঋণ পরিশোধ না করলে সুদ বৃদ্ধি পাবে।
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে একই ব্যাংক থেকে ঋণ নিন, তাহলে কিস্তি পরিশোধ সহজ হবে। সুদের পরিমাণও কমবে। কিস্তি পরিশোধে ব্যাঘাত না ঘটাতে ব্যাংকের অটো ডেবিট সুবিধা ব্যবহার করুন।
আপনার বাজেট অনুযায়ী পরিশোধের সময় নির্ধারণ করুন। ৬ মাস বা বছরে একবার ঋণের পুনর্বিবেচনা করুন। নতুন প্রকল্পে সুদ কম থাকলে তা গ্রহণ করুন। ঋণ পরিশোধে সমস্যা হলে ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন।
আগেভাগে ঋণ পরিশোধ করলে বা কম সুদে নতুন ঋণ নিয়ে আর্থিক বোঝা কমানো যায়। ঋণের মেয়াদ বাড়ানো বা তাড়াতাড়ি পরিশোধ করা আপনার অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারণ করুন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন।
ঋণ পরিশোধে অবহেলা করলে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর বেতন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
পড়াশোনা শেষে আশানুরূপ বেতনের চাকরি না পেলে ঋণ পরিশোধ কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পরিকল্পনা করে ঋণ নিন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।