তাপস দাশঃ- প্রার্থী ঘোষণার পর যে কেন্দ্র নিয়ে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছিল ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস, তা হল মালদা জেলার হবিবপুর। এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছিল সরলা মুর্মুকে। নাম ঘোষণার পরেই তিনি জানিয়ে দেন তিনি এই কেন্দ্র থেকে লড়বেন না। সরলা বিজেপিতে যোগ দেন এবং বলেন, এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছিল, সরলা পুরাতন মালদা কেন্দ্র থেকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন।
হবিবপুরে দল বদল অবশ্য এই প্রথম নয়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত পরপর তিন বার এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন খগেন মুর্মু। তিনবারই জিতেছিলেন সিপিএমের টিকিটে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে খগেন মুর্মু দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি লোকসভা ভোটে পদ্ম প্রার্থী হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। খগেন মুর্মু দল তথা বিধায়ক পদ ছাড়ার ফলে হবিবপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হবিবপুর কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী জুয়েল মুর্মু। তৃণমূল কংগ্রেসের অমল কিস্কুকে তিনি ৩০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন।
হবিবপুর আসনটি মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। এই বিধানসভাটি তফশিলি জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। ২০১১ ও ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রে সিপিএম জিতেছিল বটে, কিন্তু প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জয়ের ব্যবধান ছিল নিতান্তই স্বল্প। ২০১১ সালে সিপিএমের খগেন মুর্মু মাত্র ২০০০-এর কিছু বেশি ভোটে জিতেছিলেন। ২০১৬ সালেও সিপিএমের টিকিটে দাঁড়িয়ে খগেন মুর্মু জেতেন মাত্র আড়াই হাজার ভোটে। ২০১১ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩১ হাজারের বেশি ভোট। ২০১৬ সালে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রদীপ বাস্কে ৪১ হাজারের বেশি ভোট পান।
আরও পড়ুন, কোভিডে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা পড়তেই চটে লাল অভিষেক, কমিশনকে তোপ তৃণমূলের যুবরাজের
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সরলা মুর্মুর ভাগ্যে কোনও আসনই জোটেনি। হবিবপুরে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন জুয়েল মুর্মু। আর তৃণমূলের প্রার্থী? ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে পদ্মফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রদীপ বাস্কে ২০২১-এ লড়ছেন জোড়া ফুল প্রতীকে। এই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ হবে রাজ্যের সপ্তম দফা নির্বাচনের দিন, অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল।