দ্রুত কমছে গর্ভজাত সন্তানের হার্টবিট, এরপর অলৌকিক কাহিনি লিখলেন ডাক্তার কৌশিক চৌধুরী

  • এ যেন সাক্ষাৎ অগ্নিশ্বর ডাক্তার 
  • করোনা আর লকডাউনের বাজারে প্রায় অত্যাশ্চর্য ঘটনা
  • সকলকে অবাক করে এক চিকিৎসক যা নজির রাখলেন
  • তাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে মানবতাকে কুর্ণিশ জানাতেই হবে
     

মিতালি সরকার- এই মড়কের সময়ে ঠাকুরপুকুরের কবরডাঙার এক দম্পতির জীবনে যা ঘটলো, তাতে করে মনে হল, লকডাউনের মাঝে শহরের পথে পথে স্বয়ং ঈশ্বর ঘুরে বেড়াচ্ছেন ডাক্তারের ছদ্মবেশে! ঠাকুরপুকুরের কবরডাঙ্গার দিন-আনা দিন- খাওয়া এক দম্পতি। আর তাদেরকে ঘিরেই গড়ে ওঠা এক শহুরে রূপকথার গল্প তৈরি হল ঘোর  লকডাউনের মাঝে।  
গৌর মণ্ডলের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী শিখা মণ্ডলকে বাঙ্গুর হাসপাতাল থেকে  প্রসবের দিন দেওয়া হয়েছিল ৭ এপ্রিল। এই পরিস্থিতিতে ওই দিন সকালে মহিলার পেটের ভেতর বাচ্চাটি নড়াচড়া বন্ধ করে দেয়।  সঙ্গেসঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঙ্গুরে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরোটাই করোনা হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। প্রসূতিদের চিকিৎসার কোনও ব্য়বস্থা আর নেই সেখানে। ঘোর লকডাউনের বাজারে তখন মাথায় হাত  শিখা মণ্ডল আর তাঁর স্বামী গৌর মণ্ডলের।
এমতাস্থায়,  এক পারিবারিক বন্ধুর থেকে একজন গাইনোকোলজিস্টের ফোন নম্বর হাতে পাওয়া পাওয়া গেল। নাম ডক্টর কৌশিক চৌধুরী। একটা অটো জোগাড় করে ওই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হল  শিখাদেবীকে। প্রসূতিকে দেখে ওই চিকিৎসক বলেন, বাচ্চার হার্টবিট প্রায় বন্ধ হয়ে এসেছে। এক্ষুণি অপারেশন করতে হবে। নইলে বাঁচানো যাবে না বাচ্চাকে।
কিন্তু এক্ষুণি কী করে অপারেশন করানো যাবে? দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। কোনও নার্সিং হোম বা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতা নেই। সবার যখন একেবারে আতান্তরে পড়েন, ঠিক তখনই ওই চিকিৎসক নিজের গাড়িতে করে প্রসূতিকে নিয়ে আসেন এক নার্সিমহোমে। গাড়ি করে অ্যানাসথেটিস্টকেও বাড়ি থেকে তুলে আনেন। যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে শুরু করে দেন অপারেশন।  শিখাদেবীর একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। 
না, এখানেই শেষ নয়। মা ও শিশু, দুজনেই যখন নিরাপদে শুয়ে রয়েছেন নার্সিংহোমের বিছানায়, তখন গৌড় মণ্ডের  একটাই চিন্তা, কী করে সেখানকার বিল মেটাবেন। ডা. লাহিড়ী তখন নিঃশব্দে ওঁদের পাশে এসে দাঁড়ান। চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দেন-- কোনও চিন্তা নেই। তারপর নিজের অপারেশন ফি নেওয়া তো দূর অস্ত, নার্সিংহোমের যাবতীয় বিল তিনি নিজেই মিটিয়ে দেন!
কৃতজ্ঞ চিত্তে ভিজে ভিজে চোখ নিয়ে ওই দম্পতি 'ডাক্তারবাবু'কে অনুরোধ করেন, ছেলের একটা নাম দেওয়ার জন্য়। ডাক্তারবাবুও হাসি মুখে ওঁদের পাশে দাঁড়িয়ে নবজাতকের নাম দেন-- করোনাশ।
শহরের চেনা চেনা ভরসাগুলো কি তবে ফিলে এলো আবার?

Share this article
click me!

Latest Videos

এ যেন লুকোচুরি খেলা! ক্ষণে ক্ষণে স্থান পরিবর্তন, এখনও অধরা বাঘিনী যমুনা | Jhargram Tiger News
'কেন্দ্র যদি একটু দয়া দেখায় তাহলে হুগলিতেও মেট্রো চলবে', আশাবাদী Rachana Banerjee
নওশাদ সিদ্দিকীকে জঙ্গি আখ্যা Saokat Molla-র, পাল্টা বড় পদক্ষেপ Naushad Siddiqui-র
Suvendu Adhikari Live : নবান্নের সামনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্না অবস্থান মঞ্চে শুভেন্দু
‘প্রণামের সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছে বাঙালি’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন কী বলছেন | Dilip Ghosh