প্রকাশ্যে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করেছে তাঁর মেয়ে। শোরগোল পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বুধবার দিনভর নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন সানা গঙ্গোপাধ্যায়। রাতে মাঠে নামলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের টুইট, 'দয়া করে সানাকে এসব থেকে দুরে রাখুন। এই পোস্ট একেবারেই সত্যি নয়। ও খুবই ছোট। রাজনীতির এইসব ব্যাপার ওর পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।' সানার পোস্ট যদি সত্যিই ভুয়ো হয়, সেক্ষেত্রে সৌরভকে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানানোর পরামর্শও দিয়েছেন অনেকেই।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে। বাংলায় আন্দোলনের নামে কয়েক দিন ধরে রীতিমতো তাণ্ডব চলেছে। গত সোমবার থেকে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরইমধ্যে বুধবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে সানার ইনস্টাগ্রাম স্টেটাস। ইনস্টাগ্রামে লেখক-সাংবাদিক খুশবন্ত সিংয়ের 'দ্য এন্ড অফ ইন্ডিয়া' বইয়ের একটি অংশ শেয়ার করে স্টেটাস দেন সৌরভ-কন্যা। আর বইয়ের যে অংশটি শেয়ার করেছিলেন সানা, তাতে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে।
খুশবন্ত সিংয়ের ভাষা ধার করে সানা বলতে চেয়েছেন, 'আজ যাঁরা ভাবছেন, আমরা তো এদেশের হিন্দু আমাদের আবার কী বিপদ? যা সব সমস্যা তা তো মুসলিমদের। তাঁদেরও বিপদ আসবে। মোটেও ভাববেন না, আপনি বেঁচে গিয়েছেন। সঙ্ঘ পরিবার ইতিমধ্যেই বামমনষ্ক ইতিহাসবিদদের টার্গেট করা শুরু করেছে। এরপর হয়তো যে সব মেয়েরা স্কার্ট পরে তাঁদের উপর ওদের ঘৃণা আছড়ে পড়বে। যাঁরা মাংস খান, যাঁরা মদ্যপান করেন, তাঁদের সবাইকে টার্গেট করা হবে।' সোজা বাংলায় মোদী জমানা এ দেশের যে কেউ নিরাপদ নন, সেকথাও বোঝাতে চেয়েছেন সৌরভ-তনয়া। শুধু তাই নয়, খুশবন্ত সিংয়ের বইয়ের ওই অংশে একথাও বলা হয়েছে , 'প্রত্যেক ফ্যাসিস্ট শক্তিই প্রথমে কোনও একটি জাতি বা সংগঠনের প্রতি ভীতি সৃষ্টি করে। এটা একটি জাতি বা সংগঠন দিয়ে শুরু হলেও, এখানেই থেমে থাকে না। ' একটি পেপার কাটিং হিসেবে গোটা লেখাটাই সানার গঙ্গোপাধ্যায়ের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে স্টোরি হিসেবে আপলোড করা হয়। সেই স্টেটাসের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সৌরভ-কন্যার বক্তব্যের প্রশংসা করেন নেটিজেনরাও। উল্লেখ্য, বাংলায় এখন কোনও প্রথমসারির সিনে তারকা কিংবা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব কিন্তু প্রকাশ্যে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেনি।