৩০০ বছরের পুরনো ভাগ্যকুলের রায় পরিবারের দুর্গাপুজো, রইল ইতিহাস

  • মায়ের আগমন বার্তায় সেজে উঠেছে চারিদিক
  • কলকাতার পুরনো পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম ভাগ্যকুলের রায় পরিবারের দুর্গা পুজো
  • পুজো শুরু হওয়ার পেছনে আছে এক ইতিহাস
  • এই পরিবারের উল্লেখযোগ্য রীতি হল 'টাকাযাত্রা'

শুরু হয়েছে দেবীপক্ষ। মায়ের আগমন বার্তায় সেজে উঠেছে চারিদিক। মা দুর্গার আগমনে খুশীর জোয়ারে ভেসেছে কচি থেকে বৃদ্ধ সকলেই। সেই মতই তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তর কলকাতার ভাগ্যকুল রাজবাড়িতে। 

এই পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অজানা ইতিহাস। উত্তর কলকাতার শোভাবাজার স্ট্রীটে ভাগ্যকুল বাড়ির পুজো সেই পূর্ববঙ্গ থেকে হয়ে আসছে। পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার অন্তর্গত পদ্মানদীর উপকূলবর্তী একটি গ্রামের নাম ভাগ্যকুল। এই পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কৃষ্ণজীবন কুণ্ডু। তিনি ঢাকার এক ধনী ব্যবসায়ী জীবন সাহার এস্টেটে চাকরি করতেন। এবং কলকাতায় এসে সস্তায় সোনা ও লবন কিনে পরে চড়া দামে বিক্রি করে প্রচুর লাভ করতেন। একবার জীবন দাসের জন্য সোনা কিনতে কলকাতায় এসে সোনা না পাওয়ায় লবন কিনে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন কৃষ্ণজীবন। তবে জীবন সাহা বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন এবং কৃষ্ণজীবনকে বলেছিলেন ঐ লবনের লাভ ক্ষতি যাই হোক না কেন তার দায়িত্ব কৃষ্ণজীবনের। হঠাৎ লবনের দাম কমে যাওয়ায় পঞ্চাশ হাজার টাকা লাভ করেছিলেন তিনি। তবে কৃষ্ণজীবন ছিলেন খুবই দয়াবান। তাঁর এই দানধ্যানের কথা শুনেই সেখানকার নবাব তাঁকে 'রায়' উপাধি দিয়েছিলেন। এবং সেই থেকে শুরু হয় তাদের জমিদারীর। তবে ১৯৩৫ সালে দাঙ্গা বাঁধলে তাঁরা চলে আসেন কলকাতায়। 

Latest Videos

রায় পরিবারের দুর্গা পুজো প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। কলকাতার শোভাবাজার অঞ্চলের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন ওই পরিবারের সকলে। দুর্গাপুজোটিও তাঁদের শোভাবাজার রাজবাড়িতেই হয়। তবে তা পালা করে। এই পরিবারে বৈষ্ণব মতে দুর্গা পুজো হয়। এই বাড়ির ডাকের সাজের প্রতিমা উচ্চতায় ১০ ফুটেরও বেশি। পুজোয় ১৫ দিন আগে থেকেই দেবী চণ্ডীর ঘট বসানো হয় ও চণ্ডী পাঠ করা হয়। পূর্ববঙ্গের রীতি মেনে এই পরিবারের দুর্গা প্রতিমার ডানদিকে কার্তিক এবং বামদিকে গনেশ। প্রতিমার বৈচিত্রের মত বিজয়া দশমীও একটু অন্যভাবে পালিত হয় এই পরিবারের। বিজয়া দশমীর সকালে তাঁদের 'টাকাযাত্রা ' অনুষ্ঠানের রীতি রয়েছে। এই রীতি অনুসারে বাড়ির মেয়ে পুরুষরা শাড়ি ও ধুতি পরে আসেন এবং দুটো রুপোর টাকা, পদ্মফুল, ধান, দূর্বা, খাগের কলম রাখা হয়। তারপর বাড়ির পুরুষরা একটি বাটি নিয়ে কুলদেবতার মন্দিরে এবং আর একটি বাটি নিয়ে দুর্গা মণ্ডপে আসেন। গৃহদেবতা ও দুর্গা মায়ের পায়ে ছুইয়ে এই দুটি বাটি যে যার ঘরে নিয়ে যায়। 

টাকাযাত্রার পর থাকে দেবীর বিসর্জন পর্ব। মায়ের প্রতিবিম্ব দর্শনের পর থাকে দর্পণ বিসর্জন। দুপুরে থাকে ইলিশ বিদায় পর্ব। এই দিন সকলে ইলিশ ভোগ গ্রহন করেন। এবং সরস্বতী পুজোর আগেয়ার বাড়িতে ইলিশ মাছ ঢোকে না। বহুকাল ধরেই ভাগ্যকুল পরিবারে এই প্রাচিন রীতিনীতি চলে আসছে। পুরনো রীতিনীতি, দেবীর পুজোয় এবং সেবার পদ্ধতি এক অন্য বৈশিষ্ট্য দিয়েছে এই দুর্গোৎসবকে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Mamata Banerjee আজ TMC-র মুখ্যমন্ত্রী আছেন কাল জামাতের মুখ্যমন্ত্রী হবেন’ বিস্ফোরক Sukanta Majumdar
New Alipore-এ বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন! পুড়ে ছাই একাধিক ঝুপড়ি, আগুন নেভাতে মরিয়া দমকল
PM Modi Live: কুয়েত থেকে বিশেষ বার্তা মোদীর, দেখুন সরাসরি
অনলাইনে পুজোর দেওয়ার নামে প্রতারণা! ঘাড় ধরে নিয়ে গেল পুলিশ | Hooghly News Today
ক্যানিং-এ এসে ভেবেছিল ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকবে! রাতেই গ্রেপ্তার কাশ্মীরি জঙ্গি | Canning News Today