দুর্বারের দুর্গাপুজোয় নিষিদ্ধপল্লীও আজ 'সিদ্ধ'

  • আমন্ত্রণ জানালেও ওদিকে ভিড়তে শঙ্কা থাকে অনেকের মনে
  • ঠাকুর দেখতে গেলেই উটকো ঝামেলার আশঙ্কায় অনেকেই যান না ওদিকে
  • এমনিতে নিষিদ্ধ হলেও দুর্গোপুজোর এই কটা দিন 'সিদ্ধপল্লী সোনাগাছি' 

debojyoti AN | Published : Oct 4, 2019 7:48 AM IST / Updated: Oct 04 2019, 01:56 PM IST

আমন্ত্রণ জানালেও ওদিকে ভিড়তে শঙ্কা থাকে অনেকের মনে। ঠাকুর দেখতে গেলেই উটকো ঝামেলার আশঙ্কায় অনেকেই যান না ওদিকে। এমনিতে নিষিদ্ধ হলেও দুর্গোপুজোর এই কটা দিন 'সিদ্ধপল্লী সোনাগাছি।' 

রবীন্দ্র সরণিতেই গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে সোনাগাছির 'নিষিদ্ধ অন্ধ' অলি গলি । সেখান থেকে ঘুরে ঘুরে সাহানুল্লা গাজির মসজিদকে ডান হাতে রেখে অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিট। এটাই শোভাবাজারের রেড লাইট এরিয়া, এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লী। একটু এগোলেই ডালপট্টির মোড়েই দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির দুর্গাপুজো। প্রায় ৬৫,০০০ মহিলা-পুরুষ এবং রূপান্তরকামী যৌনকর্মীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন এই দুর্বার।

সোনাগাছি সংলগ্ন অঞ্চলে অনেকগুলি দুর্গাপুজো হলেও কোনও পুজো মণ্ডপেই যৌনকর্মীদের প্রবেশের বা পুজোতে অংশগ্রহণের কখনও কোনও সুযোগ বা অনুমতি থাকত না। অনেক ঝড় ঝাপ্টা পেরিয়ে ২০১৩ সালে দুর্বারের এই পুজো শুরু। টানা ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে পুজো হয় ছোট্ট একটি ঘরে ।  বাইরে পুজো করার অনুমতি ছিল না বলেই মা দুর্গার স্থান হয় ঘরে। নানান বাধা বিপত্তিতে ২০১৬, ২০১৭ সালে বন্ধ হয়ে যায় এই পুজো।  ফের হাইকোর্টে মামলা করে ২০১৮ সালে প্রথম বাইরে পুজো করার অনুমতি আদায় হয়। শুরু হয় পুজো। এবারও হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া ৮ ফুট বাই ২০ ফুটের ছোট্ট জায়গাতেই দুর্বারের এই দুর্গাপুজো হচ্ছে। এ বছর পুজোর বাজেট মাত্র দুলাখ টাকা। পুজোর থিম বিশ্ব উষ্ণায়ন। তবুও যৌনকর্মীদের এই পুজো ঘিরে রয়েছে অনেকেরই প্রবল আপত্তি।

যৌনকর্মীদের বাড়ির মাটি ছাড়া তৈরি হয় না দুর্গাপ্রতিমা। অথচ দুর্গাপুজোতেই যৌনকর্মীদের প্রবেশাধিকার নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে যৌনকর্মীদের সন্তানরা গান, নাচ, আবৃত্তি, আঁকা নিয়ে মেতে রয়েছে পুজোয়। পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই পুজো কোনও স্পনসর পায় না। এই পুজোর কোনও প্রচার নেই। অন্য পুজোর সাথে মণ্ডপ, প্রতিমা বা আলোর টক্করে হয়তো এই পুজো পারবেও না। তবুও শুধু এক সাধু উদ্য়োগের পাশে দাঁড়াতে সবাইকে এই পুজো দেখার আহ্বান জানিয়েছে পুজো কমিটি। উদ্য়োক্তারা নিজেই অভয় দিয়েছেন,পুজো দেখতে এসে হেনস্থার শিকার হতে হবে না কাউকে। তবে জায়গাটা যেহুতু নিষিদ্ধ,মোবাইলে ছবি তোলাও এখানে নিষিদ্ধ।  
 

Share this article
click me!