মহালয়াতেই নবমী নিশি! ‘মা’ নয়, কুমারী দুর্গা সখী সহযোগে বছরে মাত্র একদিন আসেন বার্নপুরের ধেনুয়া গ্রামে

মহালয়ার ভোর থেকে শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজো। একদিনের অভিনব দুর্গাপুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী এসে উপস্থিত হন ধেনুয়া গ্রামে।

একদিনেই দুর্গাপুজো শেষ? এমন কথা বোধহয় বাঙালি দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে না। কিন্তু, এমনটাই ঘটে আমাদের বাংলায়, তাও আবার বেশ ধুমধাম করেই। মহালয়ায় মা দুর্গা তাঁর সখীদের নিয়ে আসেন, আবার মহালয়ার দিনেই ফিরে যান কৈলাসে। অভিনব একদিনের এমনই দুর্গাপুজো হয় পশ্চিম বর্ধমানে।

বার্নপুরের হীরাপুরের ধেনুয়া নামের এই গ্রামে দেবী দুর্গার উপাসনা শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষের শুরুতেই। দামোদর নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামে রয়েছে কালীকৃষ্ণ আশ্রম। মহালয়ার ভোর থেকে শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজো। এই একদিনের মধ্যেই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিথির পুজো সারা হয়ে যাবে। মহালয়ার দিনেই নবমীর ভোগ খান গ্রামের মানুষ। একদিনের এই অভিনব এই দুর্গাপুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী এসে উপস্থিত হন ধেনুয়া গ্রামে।

Latest Videos


এখানকার বর্তমান পুরোহিত বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুজোয় মোট চার রকমের ভোগ নিবেদন করতে হয় একদিনেই। দশমীর পুজো শেষ হয়ে যায়, তারপর হয় ঘট বিসর্জন। কিন্তু, পুজোর ঘট ভাসিয়ে দেওয়া হয়ে গেলেও দেবী প্রতিমাকে অন্দরেই রেখে দেওয়া হয়। দেবী দুর্গা এখানে কুমারী মহামায়া। পুরোনো রীতি মেনে মহালয়ার সকাল থেকে এই পুজো শুরু হয়। নবপত্রিকা বা কলা বউ স্নানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মহা সপ্তমীর পুজো। তারপর একে একে নিয়ম মেনে ভক্তিভরে সম্পন্ন হয় মহাষ্টমী ও মহানবমীর পুজো। তারপর অপরাজিতা পুজো দিয়ে শেষ হয় দশমী।


কথিত আছে, এই কালীকৃষ্ণ আশ্রমের সেবায়েত ছিলেন যতীন মহারাজ। তাঁর গুরুদেব তেজানন্দ ব্রহ্মচারী স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো আরম্ভ করেছিলেন। বছর তিনেক প্রয়াত হন মন্দিরের সেবায়েত শ্রী যতীন মহারাজ। বর্তমানে আশ্রমের দায়িত্বে রয়েছেন কালীকৃষ্ণ ধীবর। তিনি জানান, দশভূজা দেবী এখানে সিংহবাহিনী হলেও অসুরদলনী নন। আগমনী দুর্গার সঙ্গে থাকেন দুই সখী জয়া ও বিজয়া। ধেনুয়া গ্রামের বাসিন্দারা একদিনের এই পুজোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন। ধুমধামে মেতে ওঠেন প্রত্যেক মানুষ। 

কথিত আছে, ধেনুয়া গ্রামে এই দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন পূজারী কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুর। এই গ্রামে তাঁর হাতে তৈরি দক্ষিণা কালী মন্দির ও মহাদেবের মন্দিরও আছে। কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুরের প্রয়াণের পর তাঁর সমাধিও এই গ্রামেই করা হয়েছে।


মন্দিরের সেবায়েত আশীষকুমার ঠাকুর জানালেন, “এখানে মা দুর্গার সঙ্গে তাঁর চার ছেলেমেয়ে লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ থাকেন না। থাকেন না মহিষাসুরও। এখানে মায়ের সঙ্গে থাকেন তার দুই সখী, যাদের নাম জয়া ও বিজয়া। তাঁরাই মায়ের সঙ্গে এখানে পূজিতা হন।” জানা যায়, এই পুজো সম্পন্ন করা হয় বৈষ্ণব রীতি মেনে। এই রীতিরই প্রচলন করেছিলেন প্রথম পূজারী কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুর। এখনও পর্যন্ত কোনওদিন সেই প্রথার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। এই পুজোয় কোনও বলি হয় না।

 
আরও পড়ুন-
দুর্গাপুজোতে নিষিদ্ধ থার্মোকল ও প্লাস্টিকের ব্যবহার, শব্দ দূষণও কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করছে রাজ্য দূষণ পর্ষদ
মোদীর জন্মদিনে ‘শাহী’ শুভেচ্ছা, সশ্রদ্ধ টুইটবার্তায় ভরিয়ে দিলেন রাজনাথ সিং, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার
বেবি পাউডারে লুকিয়ে শিশুদের মারণ বিষ! জনসন অ্যান্ড জনসনের পাউডারে ব্যান মহারাষ্ট্রের

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Dev Adhikari : এবার কী আসছে খাদান ২? খাদান সাফল্য পেতেই বড়সড় ঘোষণা দেব-যীশুদের
‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari
Narendra Modi : 'কুয়েত যেন মিনি হিন্দুস্তান', কুয়েত সফরে এসে কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী?