মহালয়ার সকালে টুইট করে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে সবার সুস্থ ও সমৃদ্ধ জীবনের কামনা করলেন তিনি। অনেকেই বলছেন, তাঁর এই টুইটের লক্ষ্য বিশেষ করে বাঙালিরা। আবার অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, মহালয়ার দিনে কি আদৌ শুভেচ্ছা জানানো উচিত?
এদিন টুইট করে প্রধানমন্ত্রী বলেন 'শুভ মহালয়া! সকলের জীবনে প্রচুর সুখ আসুক এমন প্রার্থনা করি। সবাই সুস্থ ও সমৃদ্ধ হোক। মা দুর্গার আশীর্বাদ আমাদের সমাজে সর্বদা থাকুক।'
এরপর অনেকেরই বক্তব্য বিজেপির আগামী লক্ষ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হল বাংলায় ২০২১ বিধানসভা ভোটে জয়। আর তারজন্য বাংলার মানুষের মন পাওয়ার চেষ্টা করেছেন বিজেপি নেতারা। বাংলার নেতাদের মহাতর্পন থেকে নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন সবই তার অঙ্গ। গণেশ পূজার মতো প্রধানত অবাঙালী উৎসবে তা সম্ভব নয় বলেই দুর্গা পূজাকে নিশানা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরেও অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর মহালয়ার শুভেচ্ছা জানানো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। হিন্দু বিশ্বাস মতে, পিতৃক্ষের অবসানে প্রেতলোক থেকে পিতৃপুরুষের আত্মারা মর্ত্যলোকে ফিরে আসায় তৈরি হয় এক মহা আলয়। তাই মহালয়ার দিন তিল-জল দিয়ে তর্পণ করে তাঁদের পরিতৃপ্ত করা হয়। পিতৃপুরুষদের স্মরণ করার দিনটির সঙ্গে তাই 'শুভ' শব্দটি ব্যবহার করা চলে কি না তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
আর, মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপুজোর সরাসরি কোনও যোগই নেই। বর্তমানে বাঙালি সমাজে এই দিনটিই দুর্গাপুজোর সুচনা বলে প্রচলিত। কিন্তু এর কোনও ধার্মিক ভিত্তি নেই। এর পিছনে আকাশবাণীর ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ গীতি-আলেখ্য সম্প্রচারের অনেকটাই হাত রয়েছে বলে মনে করা হয়। অনেকেরই হয়তো জানান নেই এই অনুষ্ঠানটি বর্তমানে মহালয়ার দিন চালানো হলেও আগে তা চালানো হত পুজোর ষষ্ঠীর দিন ভোরে।
এর পাল্টা অনেকে যুক্তি দিচ্ছেন মহালয়ার দিন পিতৃ পুরুষদের তর্পন করা হলেও এই দিনে শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যে বুলের কিছু নেই। তাঁদের মতে যে কোনও বিশেষ দিনেই শুভেচ্ছা জানানো যায়। তার কোনও নিয়ম-অনিয়ম নেই।