বাংলাদেশের নারাইলে ধর্মীয় সম্প্রীতির ছবিটা অনেক বেশি স্পষ্ট। চিত্রা নদীর ধারে মহিষখোলা এলাকায় মসজিদের গায়েই তৈরি হয়েছে দুর্গাপুজোর মন্ডপ। এই প্রথম নয়। গত ৪০ বছর ধরেই এই ছবির সঙ্গে পরিচিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাংলাদেশের নারাইলে ধর্মীয় সম্প্রীতির ছবিটা অনেক বেশি স্পষ্ট। চিত্রা নদীর ধারে মহিষখোলা এলাকায় মসজিদের গায়েই তৈরি হয়েছে দুর্গাপুজোর মন্ডপ। এই প্রথম নয়। গত ৪০ বছর ধরেই এই ছবির সঙ্গে পরিচিত স্থানীয় বাসিন্দারা। মসজিদের পাশেই পুজো মণ্ডপ তাদের কাছে নতুন কিছু নয়। আজান আর চণ্ডীপাঠ প্রায় একই সঙ্গে হয় সেখানে।
চিত্রা নদীর তীর ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনবদ্য এলাকা। এখানে হিন্দু আর মুসলিম একে অপরের বন্ধু-পরম আত্মীয়। তার থেকেই বড় কথা প্রত্যেক মানুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ইদ আর দুর্গাপুজো একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণ। জাতি ধর্মী নির্বিশেষে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই এখানে প্রত্যেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সামিল হন।
জামে মসজিদ হল মসজিদটির নাম। তার থেকেই নামকরণ হয়েছে, মহিষখোলা পুরাতন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস জামে মসজিদ। এটাই এই এলাকায় অবস্থিত সবথেকে পুরনো সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। অফিসের পাশেই মসজিদটি তৈরি হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। ১৯৯২ মসজিদ সংস্কার হয়েছিল।
আর মহিষখোলা সর্বজনীন পূজা মন্দির - এটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮০ সালে। তারপর থেকেই এই এলাকায় ধর্মীয় সম্প্রতির একটি পিঠস্থান হয়ে রয়েছে। এই এলাকায় তিনটি প্লট রয়েছে একটি মন্দির, একটি মসজিদ আর একটি হাসপাতাল। শরীপ আবদুল হাকিম অ্যান্ড নারাইল এক্সপ্রেস হাসপাতাল নামে দাতব্য হাসপাতাল পরিচালনা করে বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার ও আওয়ামি লিগের নেতা মাশরাফি বিন মুর্তজা।
স্থানীয় বাসিব্দাদের কথায় এলকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই মুসলিম। তবে পুজোর আচার অনুষ্ঠানে কোনও সমস্যা হয় না। অনেকক্ষেত্রে দুর্গাপুজোর কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। আবার পাল্টা ছবিও দেখা যায়। ইদ বা মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনও অনুষ্ঠানে এগিয়ে আসেন হিন্দুরা। দীর্ঘ দিন ধরেই এই এলকার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে বাস করছেন।
ধর্মীয় কর্মসূচি পালন নিয়েও এই এলাকায় কোনও সমস্যা হয় না। স্থানীয় ইমাম জানিয়েছেন আমরা আমাদের ধর্ম পালন করি তারা তাদের ধর্ম পালন করে। কখনই কোনও সমস্যা হয় না। এখানে দুর্গা প্রতিমা দেখতে যেমন মুসলিমরা যায়, তেমনই প্রয়োজনে মসজিদে আসতে দ্বিধা করে না হিন্দুরা।