
করোনা কেড়েছে মানসিক শান্তি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চিন থেকে ধীরে ধীরে জাল বিছিয়ে ফেলে এই মারণ ভাইরাস। তারপর ভারত। এই বিশ্ব মহামারিতে মানুষ সরে যায় মানুষের পাশ থেকে, শুধুমাত্র নিজেকে বাঁচাতে। শারীরিক দূরত্ব তৈরি করে মানসিক দূরত্ব। শুরু হয় মানসিক অস্থিরতা। মানুষে মানুষের মেলবন্ধনকে নষ্ট করে ফেলে করোনা ভাইরাস। ২০২০ ও ২০২১ সাল এই করোনার আতঙ্কে কার্যত গৃহবন্দী মানুষ।
অসংখ্য সুস্থ মানুষও পরোক্ষভাবে শিকার হচ্ছে সামাজিক অস্থিরতা, আর্থিক দৈন্য, মানসিক অশান্তির। সেই মানসিক অশান্তির কিছুটা হলেও অবসান হয়েছে ২০২২ সালে। টানা দু বছর পর করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে বাইরে বেড়িয়েছেন মানুষ। কিন্তু যে সংযোগ কেটে গিয়েছিল গত দু বছরে, তা কী ফিরে আসবে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সেটাই।
৮৫ বছরের সেলিমপুর পল্লীর পুজোতে এবার সেই সংযোগের বার্তা। ক্লাবের আশা, করোনা পরিস্থিতির আগের সময় ফিরে আসুক। মানুষে মানুষে এই দূরত্ব কমে যাক। চলে যাক মানসিক অবসাদ-অশান্তি। সেই ভাবনা থেকেই ক্লাবের ২০২২ সালের দুর্গাপুজোর থিম সংযোগ। সেলিমপুর পল্লীতে ছকভাঙা পুজোর অন্যরকম গল্প, জোরকদমে মায়ের আবাহনের প্রস্তুতি চোখে পড়ল।
গত তিন বছর করোনার কবলে সারা বিশ্ব জর্জরিত। এই বছর কোথাও তাই একটু হলেও স্বস্তির শ্বাস পেয়েছে শহর কলকাতা। কারণ সেই অর্থে করোনার প্রকোপ যেমন নেই, তেমনই ভ্যাকসিনকে হাতিয়ার করে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনে বল পেয়েছে মানুষ। গত তিন বছরের শুধু হারানোর যন্ত্রণা ভুলে ২০২২ সালের দুর্গোৎসব মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠুক, চাইছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তবে অবশ্যই বিধি মেনে, সাবধানতা অবলম্বন করে। তবে সর্বাঙ্গীণ সার্থক হবে মায়ের আরাধনা। সেই লক্ষ্যেই পুজো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সেলিমপুর পল্লী ক্লাবের সদস্যরা।