প্রথম দফার ভোটে একটি ভোটও দিলেন না এই গোষ্ঠীর মানুষ

সারা দেশে যেন ভোট । আবহাওয়ার পারদ যেমন বাড়ছে, তেমনই বেড়ে চলেছে দেশবাসীর উত্তেজনার পারদ। কোন আসনে কে জয়ী হবে, কে-ই বা ক্ষমতার আসনে বসবে। কিন্তু এ সমস্ত কিছু থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখল দেশেরই এক প্রাচীন গোষ্ঠী। একটি ভোট দিলেন না গোষ্ঠীর কেউই।

swaralipi dasgupta | Published : Apr 29, 2019 7:57 AM IST

প্রথম দফার ভোটে একটিও ভোট পড়ল না এই গ্রামে। গত ১১ এপ্রিল আন্দামান ও নিকোবরের শোমপেন হাটের কোনও বাসিন্দাই ভোট দিলেন না। 

আন্দামান ও নিকোবরের এই দ্বীপে প্রাচীন আদিবাসী গোষ্ঠী এই শোমপেনরা। আন্দামান ও নিকোবর থেকে ৩১টি দ্বীপে প্রথম দফার নির্বাচন হয়েছে। এদের মধ্যে শোমপেন ঘাট ছিল অন্যতম ভোটকেন্দ্র। কিন্তু কেউই এবার গণতান্ত্রিক অধিকার ব্যবহার করলেন না। 

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আদিবাসী গোষ্ঠীদের মধ্যে মাত্র ২ জন ভোট দিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে এক জন ছিলেন ৭৫ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ ও একজন ৩২ বছরের মহিলা। ১০৭ জন ভোটারদের মধ্যে মাত্র ২ টো ভোটেই সেবার সবচেয়ে বেশি ভোটের রেকর্ড গড়েছিল শোমপেন দ্বীপ। কিন্তু এবার একটি ভোটও পড়ল না।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে লক্ষ্মীনগরের বেশ কয়েক‌টি ভোট-এর তথ্য় সংক্রান্ত ওয়র্কশপে উপস্থিত ছিলে প্রায় ৩৫ জন শোমপেন সদস্য। এঁদের প্রত্যেকের কাছেই রয়েছে ভোটার আইকার্ড। তাই স্থানীয় প্রশাসন এবছর  ভোটারদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থা করেছিল।

গ্রেট নিকোবরের এই দ্বীপ পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে। শোমপেনদের জন্য দুটি ভোটিং বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু কোনওটিতেই পা পড়েনি মোঙ্গল জাতির এই শান্তিপ্রিয় গোষ্ঠীর।  এমনকী তাঁদের কুটিরের আদলেই তৈরি করা হয়েছিল ভোটকেন্দ্রগুলি, যাতে তাঁরা আসতে কুণ্ঠা বোধ না করেন। নিবার্চন সম্পর্কে শোমপেনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য নিকোবরি ভাষা জানা একজন স্থানীয় যুবককেও রাখা হয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই কোনও কাজ হলো না।

শোমপেনদের বাস জঙ্গলেই। মহিলারা বিশেষ করে জঙ্গল থেকে বেরোন না। এঁরা বুনো শূকরের মাংস, কচ্ছপের মাংস, মাছ, মধু এবং ফল খান।

শোমপেনরা চাঁদকে নিজেদের প্রধান দেবী বলে মনে করেন। কারও মৃত্যু হলে তাঁকে নিজেদের এলাকা থেকে বেশ খানিকটা দূরে সমাধিস্থ করা হয়। আদিবাসী কল্যাণ দফতর সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে।

Share this article
click me!