কোন দলের ভাগ্য ঘুরবে এবারের ভোটে! প্রথম ভোটারদের পাল্লা ভারী কোন দিকে

  • কেন্দ্রের ৫৪৫টি আসনের মধ্যে কোন দলের ভাগ্যে কটা, বা বাংলায় ৪২টা আসনের মধ্যে কে সবচেয়ে এগিয়ে যাবে,এই নিয়ে তুমুল হইচই।  
  • কিন্তু এ তো গেল তাঁদের কথা যাঁরা ভোট ব্যাপারটা নিয়ে ওয়াকিবহল।
  • কিন্তু তারা কী ভাবছেন যাঁরা এবার প্রথম ভোট দিচ্ছেন!

swaralipi dasgupta | Published : May 12, 2019 5:51 AM IST

লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র বাকি একটা দফা। । অফিস যাওয়ার পথে হোক বা চায়ের দোকানে, কে  কাকে ভোট দিচ্ছেন, কোন দল জিতবে এই নিয়েই অনবরত চলছে বাকবিতণ্ডা। উঠে আসছে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ক্ষোভ। কেউ আবার নিজের পছন্দের রাজনৈতিক দলের জন্য় ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রের ৫৪৫টি আসনের মধ্যে কোন দলের ভাগ্যে কটা, বা বাংলায় ৪২টা আসনের মধ্যে কে সবচেয়ে এগিয়ে যাবে,এই নিয়ে তুমুল হইচই।  কিন্তু এ তো গেল তাঁদের কথা যাঁরা ভোট ব্যাপারটা নিয়ে ওয়াকিবহল। কিন্তু তারা কী ভাবছেন যাঁরা এবার প্রথম ভোট দিচ্ছেন! কেউ হয়তো সদ্য স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে রাজনীতি বুঝতে শিখেছেন। কেউ আবার বয়সের তোয়াক্কা না করে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শকে ইতিমধ্য়েই নিরেট করে ফেলেছেন। দেখে নেওয়া যাক তাঁরা কী বলছেন-

সদ্য স্নাতকের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন অরিত্রা দাশগুপ্ত। এবার প্রথম ভোট দিলেও তেমন কোনও উত্তেজনা নেই অরিত্রার। বিদ্য়াসাগর কলেজের সাংবাদিকতার ছাত্রী বলছেন, “ভোট দেওয়ার কোনও ইচ্ছেই নেই। কারও থেকেই আর কোনও আশা করছি না। হয়তো বাড়ির লোকের চাপে পড়ে ভোট দিতে হবে। যা এখন আছে তা নিয়েও কোনও আশা নেই। আর বদল এলে যে পরিস্থিতি ভয়ানক হবে তা তো জানা কথাই।”

কল্যাণী মহাবিদ্যালয়ের অর্থনীতির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনুষ্কা সরকার, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে খুব একটা নিরাশ নন। অনুষ্কার কথায়, “অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে ভারত অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু আমি চাইব দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোর দেওয়া দরকার। প্রধানমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার দিকে নজর দেওয়া উচিত। এমনকী,ওনার নিজেকেও আরও শিক্ষিত করে তোলা উচিত।”

বার বার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিজেপি-র বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলেছে। আইনের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইউনুস সুলতান বলছেন, “৫ বছর আগে যতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম ততটা এখন করি না। কিন্তু প্রথম বার ভোটার হিসেবে চাইব যে দলই ক্ষমতায় আসুক তারা যেন কর্মসংস্থান ও শিক্ষার দিকে বেশি করে নজর দেয়। বর্তমানে প্রতিটি দলই অর্থহীন বিষয়কে বেশি বড় করছে। কিন্তু আমি চাইব সরকার যেন মানুষের জরুরি বিষয়গুলিকে প্রগতির পথ দেখায়।”

 সমাজবিদ্য়ার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শরণ্যা সরকার যদিও এবারের ভোট নিয়ে বেশ উত্তেজিত। রাজনৈতিক বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ না থাকলেও সব খবরই রাখেন বাগবাজার উইমেনস কলেজের ছাত্রী।  শরণ্যা বলছেন, “প্রথম গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়ে আমি এক্সাইটেড। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন প্রতিনিধি হিসেবে বলতে পারি, আমাদের পড়াশোনা করে চাকরিটাই দরকার। তাই যে-ই আসুক, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থানের জায়গাটাকেই যেন বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হয়।”

সদ্য় স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছেন দেবজিৎ মণ্ডল। রাজনীতি সম্পর্কে ক্রমশ ধারণা প্রকট হচ্ছে তাঁর। এবার উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছেন দেবজিৎ। ভবিষ্যতে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়তে চান। দেবজিৎ-এর কথায়, “প্রথম বার ভোট দেব। যদিও রাজনীতি সেভাবেও বুঝতে শিখিনি। কিন্তু যেটুকু জানি, তাতে বাংলা নিয়ে খুব নিরাশ আমি নই। সারা দেশেও যাতে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয় সেটাই চাই।”

 দেশের ভবিষ্যৎ আমরা যাঁদের বলি,তাঁদের অনেকে ভোট দেওয়ার আগেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে  জড়িয়ে পড়েন। ফলে অনেক প্রাপ্ত বয়স্ক ভোটারদের থেকেও এঁদের ভোট রাজনীতি সম্পর্কে সুদৃঢ় ধারণা গড়ে ওঠে। রাজনীতির ময়দানে বিনোদনের প্রলোভন বা ধর্মীয় স্লোগান থেকে দূরে সরে আসল রাজনীতি বোঝার চেষ্টা করেন এঁরা। তাই এই তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের উন্নতির দিকে চেয়ে থাকেন। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভোট পেয়ে কোন দল জায়গা করে নেবে তার শুধু সময়ই বলতে পারে।

Share this article
click me!