২৩ মে একই সঙ্গে লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ ও বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল বের হবে। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের সরকার গড়বে কে, এই প্রশ্নে রাহুল গান্ধী থেকে নরেন্দ্র মোদী দেশের সব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই কিছুটা হলেও চাপে থাকবেন। তবে এঁদের সঙ্গেই কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি দারুণ স্নায়ুর চাপে ভুগছেন বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। ২৩ তারিখের ফলাফলে তাদের সরকার উল্টে যেতে পারে, এইরকম আশঙ্কাই করছেন তারা। এঁদের কারোর সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, তাও সরকার চালাচ্ছেন, কেউ বা কোনওক্রমে সংখ্যা গরীষ্ঠতা জোগার করেছিলেন।
মধ্যপ্রদেশ - বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল সামনে আসতেই রাজ্য বিজেপি দাবি তুলেছে, কমল নাথের নেতৃত্বাদীন কংগ্রেস সরকারের হাতে আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এমনকী রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেলের কাছে বিশেষ অধিবেসন ডাকার আবেদনও করা হয়। কমল নাথ অবশ্য ফ্লোর টেস্টের জন্য তৈরি বলে আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছেন। ২৩০ সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ১১৪ জনের সমর্থন। এঁদের মধ্য়ে আছেন ৪ জন নির্দল, ২জন বসপা ও ১জন সপা-র বিধায়ক। অপরপক্ষে বিজেপির হাতে রয়েছে ১০৯ জন বিধায়ক। বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতায় ফিরলে মায়াবতী কী করেন তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।
তামিলনাড়ু - তামিলনাড়ির ২২টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হবে। শাসক দল এআইএডিএমকে-র ১৮ জন বিধায়ক দলত্যাগ করায় এই উপনির্বাচন হচ্ছে। ২৩৪ সদস্যএর বিধানসভায় এআইএডিএমকে-র হাতে রয়েছে ১১৩ জন বিধায়ক, আর বিরোধী ডিএমকে-র হাতে ৯৭ জন। সরকারে টিকিয়ে রাখতে এআইএডিএমকে-র ২২টি আসনের মধ্যে ৪টি হলেই চলবে। আর সরকার উল্টিয়ে দিতে ডিএমকে-র চাই ২১টি।
গোয়া - এই ছোট্ট রাজ্যের চারটি আসনের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হবে। বিজেপি যদি ভালো না করে তবে কিন্তু সরকার বদলের তুমুল সম্ভাবনা রয়েছে। মোট ৩৬ আসনের বিধানসভায়, বিজেপি-কংগ্রেস দুই দলের হাতেই ১৪ জন করে বিধায়ক আছেন। ৩ নির্দল ও ৩ গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির বিধায়কের সমর্থনে সরকার গড়েছিলেন মনোহর পার্রিকর। অপর পক্ষে কংগ্রেসকে সমর্থন করেন এনসিপি ও এমজিপি-র একজন করে বিধায়ক। ফলে ৪টি আসনের ফলের উপর অনেক কিছু নির্ভরশীল।
মণিপুর - নাগা পিপলস ফ্রন্টের হাতে ৪ জন বিধায়ক রয়েছে। তারা বলেই রেখেছে, নির্বাচবনের ফল বের হওয়ার পর বিদেপির নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে তারা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবে। তবে ৬০ স,দস্যের বিধানসভায় ৪০ জনের সমর্থন থেকে ৪ জন কমে গেলে সরকারে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই জানিয়েছে বিজেপি। ২০১৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কিন্তু সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছিল কংগ্রেসই। পরে তাদের ২৮ জন জয়ী বিধায়কের ৮ জন বিজেপি-তে যোগ দেন। বিজেপি আত্মবিশ্বাসী হলেও অনেক কিছুই ঘটতে পারে এই পাহাড়ি রাজ্যে।
কর্নাটক- সরকার পড়ার কোনও প্রত্যক্ষ হুমকি নেই। তবে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা রয়েছে। আপাতত এই রাজ্যে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের সামলে রাখা গেলেও ২৩ তারিখ কংগ্রেস যদি খারাপ ফল করে, সেক্ষেত্রে তাদের আর আটকে রাখা যাবে না। সোমবারই মুখ্য়মন্ত্রি হিসেবে একবছর পূর্ণ করেছেন কুমারস্বামী। কিন্তু, কংগ্রেসের একাংশ যদি দল ত্যাগ করে বা জোট থেকে সমর্থন প্রত্যা করার দাবি জানায়, সেই ক্ষেত্রে আর বেশিদিন শাসকের চেয়ারে বসা হবে না তাঁর।