'গল্লি বয়' সিনেমাটা দেখেছেন অনেকেইে। সেই সিনেমা দেখে রণবীর সিং -এর প্রেমেও পড়ার লোকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বাস্তবের আরও এক 'গল্লি বয়'-এর খোঁজ মিলল বাংলাদেশে। ঢাকার এক বস্তিতে এই গল্লি বয়ের দর্শণ পাওয়া গিয়েছে। বছর দশেকের এই 'গল্লি বয়' বয়েসে ছোট হলেও তার র্যাপ দেখলে হতবাক হতেই হবে সকলকে। সাম্প্রতি রানা মৃধা নামক এক বালকের নাম এখন বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাকি বিশ্বে ছেয়ে গিয়েছে। রানা মৃধা নামের এই বালকটি কামরাঙ্গীরচরের পূর্ব রসুলপুর এলাকার আট নম্বর গলির বাসিন্দা। যার গাওয়া র্যাপ এখন ওপার বাংলা ছেড়ে এপার বাংলাতেও পৌঁছেছে। বিশ্বের বিভিন্নপ্রান্তের মানুষ এখন ইউটিউবে দশ বছরের রানার র্যাপ দেখছে।
রানার গাওয়া র্যাপ ভাইরাল হতেই, ছোট্ট রানা হয়ে উঠেছে সেলেব্রিটি। অভাবের সংসার থেকে উঠে আসা এই দশ বছরের র্যাপারের দিন কাটত ফুল বিক্রী করেই দিন কাটত। বেশিরভাগ সময়েই অর্থ মিলত না। কারও কাছে টাকা চাইলেই তার দিকে ধেয়ে আসতো নানা প্রশ্ন। কেও প্রশ্ন করত স্কুল যাওনা?, কখন যাও? এখন নাকি তারাই তাকে গল্লি বয় বলে ডাকছে। রাস্তাঘাটে তাকে দেখলেই তার কাছে লোকের আবদার আসছে সেলফি তোলার।
তবে আপাতত বন্ধ তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সেই ফুলের দোকন। যেখান থেকে রানার গল্লি বয় হয়ে ওঠার গল্প শুরু। রানার গল্লি বয় হয়ে ওঠার গল্পটা শুনলে মনে হবে ঠিক যেন সিনামাহলে বসে বড় পর্দায় কোন ছবি দেখছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্যের ছাত্র মাহমুদ হাসান তাবীবের কাছে একদিন হঠাৎ করেই বাইকে চড়ার আবদার করে রানা। তাবিবও ফেলতে পারেনি তার আবদার। বাইকে যেতে যেতে রানাকে জিজ্ঞাস করে তববীর যে সে গান জানে কি না। কারণ তার হিপ হপের সখ এবং তিনি বহুদিন ধরেই হিপ হপ নিয়ে কিছু করতে চাইছেন। গল্লি বয় দেখার পড়ে এই চাহিদা আরও বেড়ে গিয়েছে। এরপরেই সে ভাবতে শুরু করে কি নিয়ে করা যায় এই র্যাপ ভাবতে প্রথমে কিছু মাথায় না এলেও পড়ে সে ঠিক করে নেয় 'ঢাকার গল্লি বয়'-ই হবে তার বিষয়। কিন্তু কি করে শুরু করবে বা কাকে দিয়ে শুরু করবে কিছুই বুঝে পাচ্ছিল না সে। এই রকম অবস্থায় রানার তাঁর কাছে আসাটা যেন ওপরঅলাই লিখে দিয়েছিল। এরপরে তাবীবের লেখা ও সুর দেওয়া গানে গলা মেলাতে থাকে খুদে গল্লি বয়। এরপরে সবটাই সবার জানা। ইতিমধ্যেই এই খুদে প্রতিভার গাওয়া দুটি গান দেখা যাচ্ছে ইউটিউবে। আর তৃতীয়টিও খুব শীঘ্রই আস্তে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে।
এই রানার জীবনে তাবীব যেন ভগবানেরই মতই এসেছিল। আজ তারজন্যই রানার নাম ছড়িয়েছে সর্বত্র। তার সঙ্গে সেলফির তোলার জন্য ব্যস্ত এখন সকলে। তবে এখন তাবিবের একটাই কামনা রানার মত আরও গল্লি বয়-কে সে যেন এই ভাবেই বস্তি থেকে বের করে এনে একটা নতুন পরিচয় দিতে পারে।