এখনও পুজো মণ্ডপে গেলেই শোনা যায় শ্যামাসঙ্গীত শিল্পী পান্নালাল ভট্টাচার্যের গান। বাঙালির সিডি-ক্যাসেটের সংগ্রহেও তাঁর স্থান আজও কেউ নিতে পারেননি। বাঙালির মননে থেকে গেলেও যোগ্য সম্মান পাননি পান্নালাল ভট্টাচার্য। এই দাবিতে গত বছর অক্টোবরে প্রয়াত শিল্পীর মেয়ে শর্বরী ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি লেখেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শর্বরীদেবীর সঙ্গে দেখাও করেন। ১৯৬৬ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে আত্নহত্যা করেছিলেন। তার পরে বাঙালি তাঁর শ্যামাসঙ্গীত শুনে গিয়েছেন। কিন্তু যোগ্য সম্মান পাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শর্বরীদেবী বলেন, "আমার বাবা কেন বঞ্চিত থাকবেন! সব শিল্পীকেই তো আপনি সম্মান দিচ্ছেন। ওঁর মতো একজন শিল্পীকেও সম্মান দেওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়।"
শর্বরীদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আমার বাবার জন্য কেউ কোনও দিন কিছু করেননি। শ্রোতারা শুনে যাচ্ছেন তাঁর গান। যাতে সরকার থেকে যোগ্য সম্মান পান তিনি, তা দেখতে বলেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।"
এর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শর্বরীদেবীকে চিঠি দিয়েই উত্তর দেন, "এবছর থেকেই চালু হবে পান্নালাল ভট্টাচার্য স্মৃতি পুরস্কার। যাঁরা শ্যামাসঙ্গীত বা ভক্তিগীতি গান, তাঁদেরকেই এই পুরস্কার দেওয়া হবে।"
এবছর শিল্পী প্রেম দেবের হাতে কবি জয় গোস্বামী পান্নালাল ভট্টাচার্য স্মৃতি পুরস্কার তুলে দেন। শর্বরী দেবীর কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থাকতে পারেননি। আমার বাবা শ্যামাসঙ্গীতে ইতিহাস গড়ে গিয়েছেন। তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও ইতিহাস গড়লেন।"
পান্নালাল ভট্টাচার্যের পরিবারে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়ে। স্ত্রীর অনেকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বড় মেয়ে কাজরী বিবাহিতা। কিছুদিন আগেই মেজো মেয়ে কাকলির মৃত্যু হয়েছে। ছোট মেয়ে শর্বরী দেবী জানান, "এখন আমি পুরোই একা। তবে এই পুরস্কার চালু হওয়ায় আমি আপ্লুত। আমরা কেউই থাকব না। কিন্তু এই পুরস্কার থেকে যাবে।"