Published : Jun 27, 2021, 02:34 PM ISTUpdated : Jun 27, 2021, 06:00 PM IST
সুর সাম্রাজ্যে পঞ্চম মানেই নস্টালজিয়া। ভারতের বুকে একের পর এক এমন কম্পোজিশন হাজির সৃষ্টি করে গিয়েছেন তিনি, যা এক কথায় বলতে গেলে আজও স্বর্ণযুগের ইতিহাস। সুর, ছন্দ, লয়- ত্রয়ের পার্ফেক্ট ব্যালন্স আর সঙ্গে পঞ্চমের ক্রিয়েটিভ মাইন্ড, সর্বদাই সৃষ্টি করেছে এক নতুন নিদর্শন। মাত্র নয় বছর বয়সে ফান্টুস ছবিতে প্রথম গান। সেই থেকে শুরু পথচলা।
সুরের সম্রাট শচীন দেববর্মণ এবং মীরা দেব বর্মণের হাত ধরেই সঙ্গীতের শিক্ষা শুরু। ছোট বেলায় শ্বাসের সমস্যা থাকায় ঠিকভাবে কথা বলতে পারতেন না। গান গাওয়ার কোনও প্রশ্নই ছিল না। ডাক্তার সাফ মানা করেছিলেন। কারণ ফুসফুসের সেই ক্ষমতাই নেই। কুয়োতে সাঁতার কেটে এই সমস্যাকে দূর করেছিলেন রাহুল দেববর্মন।
29
আর ডি বর্মণ প্রথমের দিকে শুধু হারমোনিয়াম বাজাতেন। একদিন স্কুলে পড়ার সময় তিনি বাবাকে বলে বসেন, একদিন নাকি তিনি শচীন দেববর্মণের থেকেও বড় সংগীতকার হবেন। আর সফর শুরু সেই সময় থেকেই।
39
শুরুর দিকে বাবার সঙ্গে সহপরিচালক হিসেবে বেশ কিছুদিন কাজ করেন। সেই সময় আর ডি বর্মণের খুব ভালো বন্ধু এবং বিখ্যাত চলচিত্র পরিচালক গুরু দত্ত ‘রাজ’ সিনেমার সংগীত পরিচালকের দায়িত্ব দিলেন তাকে। সেই থেকেই সহপরিচালক থেকে পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু।
49
তবে সেই সময় গুরু দত্তের উপর বেজায় চটেছিলেন শচীন দেববর্মণ। কারণ তিনি বলেছিলেন, পঞ্চম এখনো স্বাধীন পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এই নিয়ে বাবা এবং ছেলের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলে। তবে জিত হয়েছিল বাবার। ফিল্মি দুনিয়ায় রাজ মুখ থুবড়ে পড়লো।
59
এর পর ১৯৬১ সালে পরিচালক মেহেমুদ আর ডি বর্মণকে সুযোগ দিলেন। এই সুযোগটি তিনি সুন্দরভাবে কাজে লাগালেন। নিজের প্রতিভাকে বাবা তথা সমগ্র বলিউডের কাছে প্রমাণ করে দিলেন। সিনেমার নাম ছিল ছোটে নবাব। এই সিনিমের একটি গান উল্লেখ না করলেই নয় ‘চান্দা ও চান্দা কিসিনে চুরায়ি তেরি মেরি নিন্দিয়া’।
69
এর পর ভুত বাংলা ছবিতেও মেহেমুদ আর ডি বর্মণকে সুযোগ দিয়েন। গান তো ভালোই হিট হচ্ছিল, তবে, পঞ্চমকে সেই ভাবে কেউ লক্ষ্য করছিল না। তাঁর কারণ সেই সময়কার বড় বড় সংগীত পরিচালকদের সঙ্গে দর্শক কোন ভাবেই একসারিতে পঞ্চমকে দাঁড় করাতে পারছিলেন না।
79
যদিও তাতে থেমে থাকে না সফর। অনেকটা পথ ছিল চলার বাকি। তাই দিনে দিনে পরিণত হয়ে উঠছেন সকলের প্রিয় আরডি বর্মন।
89
লাতিন, পশ্চিমী, আরবি ঘরানার সুর ব্যবহারের জন্য বিদেশ থেকে অনেক বাদ্যযন্ত্র আনিয়েছিলেন আর ডি বর্মণ। কাঁচের গ্লাসে চামচ ঠুকেই কম্পোজ করেন ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে জো’গানটি।
99
জল ভর্তি বোতলের শব্দ ব্যবহার করে রেকর্ড করেন ‘ও মাঝি রে’ গান। তালিকা থেকে বাদ পড়েনি খালি বোতলও। সুর সাম্রাজ্যে আজও তিনি সেরার সেরা, অনবদ্য তাঁর সৃষ্টি, আজও রাহল দেব বর্মন মানেই সংগীত জগতের স্বর্ণযুগ।