'করোনাভাইরাস হিমশৈলের চূড়ামাত্র', আরও মহামারির জন্য সতর্ক করলেন চিনা বাদুড়-মানবী

তাঁকে বলা হয় ব্যাট ওম্যান

বাদুড় ও  বাদুড় বাহিত ভাইরাস নিয়ে এতটাই সম্বৃদ্ধ তাঁর গবেষণা

তিনি বলছেন নতুন করোনাভাইরাস মহামারি তো হিমশৈলের শুধু চূড়াটা

গভীরে আরও কত ভাইরাস লুকিয়ে আছে

 

amartya lahiri | Published : May 27, 2020 10:21 AM IST

নতুন করোনাভাইরাস অর্থাৎ কোভিড-১৯ মহামারি সৃষ্টি করেছে যে ভাইরাসটি, সেটি 'আসলে হিমশৈলের চূড়া মাত্র', এমনটাই দাবি করেছেন চিনা 'বাদুড়-মানবী' বা 'ব্যাট ওম্যান' শি ঝেংলি। বাদুড় এবং বাদুড়ের দেহে থাকা ভাইরাস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করার জন্যই চিনের এই শীর্ষস্থানীয় ভাইরাস বিশেষজ্ঞ এই উপাধি পেয়েছেন। সম্প্রতি চিনের সরকারি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে, তিনি জানিয়েছেন কোভিড-১৯'এর মতো ভাইরাসঘটিত আরও অনেক মহামারি ঘটতে পারে, এই ধরণের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আরও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন।

উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি, অর্থাৎ যে ভাইরাস সংক্রান্ত গবেষণাকেন্দ্রকে অনেকে চলতি মহামারির উৎস হিসাবে দাবি করছেন (যদিও ভাইরাসটি যে গবেষণাগারে তৈরি নয়, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত) সেই কেন্দ্রেরই ডেপুটি ডাইরেক্টর পদে রয়েছেন ঝেংলি। তিনি বলেছেন, ভাইরাস নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে সমস্ত দেশের সরকার এবং বিজ্ঞানী-গবেষকদে তাদের আবিষ্কার সম্পর্কে আরও স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতার প্রয়োজন। করোনাভাইরাস মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে একটি ভাইরাস সমগ্র মানব সভ্যতায় বিপদ ডেকে আনতে পারে।

 

তিনি আক্ষেপ করেছেন, এই মহামারির সময়ে আরও বেশি করে বিজ্ঞান নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। শি ঝেংলি সতর্ক করে বলেছেন, 'আমরা এখন যে অজানা ভাইরাসটি আবিষ্কার করেছি, তা আসলে হিমশৈলের চূড়া মাত্র। যদি পরের মহামারি থেকে মানব সব্যতাকে রক্ষা করতে হয়, তবে আমাদের আগে ভাগেই গবেষণা করে এই বন্যপ্রাণী বাহিত ভাইরাসগুলি সম্পর্কে জানতে হবে আর আগাম সতর্কতা জারি করতে হবে। যদি ভাইরাসগুলি সম্পর্কে না গবেষণা করা হয় তবে আরও একটি মহামারি আসতে বেশি সময় লাগবে না'।

প্রসঙ্গত করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেও - দুজনেই কোভিড-১৯ রোগের উৎপত্তি হিসাবে সরাসরি চিনের উহান শহরের ভাইরোলজি পরীক্ষাগারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। গত ডিসেম্বরে এই শহরেই প্রথম মহামারিটির বিস্তার ঘটেছিল। সেই দাবি একেবারে নস্যাত করেছেন ঝেংলি। তাঁর দাবি তাঁদের গবেষণাগারে যে ভাইরাসগুলি নিয়ে কাজ হচ্ছে তাদের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে বর্তমানে মানুষের দেবে যে করোনভাইরাস ছড়িয়েছে, তার কোনো মিল নেই।

তিনি এই নিয়ে রাজনীতি না করে বরং প্রথমে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ খুঁজে বের করতে হবে। তারপরের কাজই হল বিশ্বের সবকটি দেশ মিলে বাদুড়-বাহিত অন্যান্য করোনভাইরাস নিয়ে বিশদে গবেষণা করে পরবর্তী মহামারিগুলির জন্য প্রস্তুত হতে হবে। কারণ আজ না হোক কাল কোভিড-১৯'এর মতো আরও মহামারির ঝুঁকি তৈরি হবেই।

 

Share this article
click me!