আগের মতো আর সংক্রমণ ছড়াচ্ছে না। তবু করোনাভাইরাসের ভূত ভর করেছে গোটা দেশে। আর যার ফলে এবার চিনে পিছিয়ে যেতে পারে পার্লামেন্টের বার্ষিক সভা। সোমবার জানা গিয়েছে, মার্চ মাসে চিন বার্ষিক কংগ্রেস পিছিয়ে দিতে পারে। এই কংগ্রেসই কিন্তু চিনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সম্মেলন। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, যেহেতু আরও কয়েকশো স্বাস্থ্যকর্মীকে পাঠানো হয়েছে করোনাভাইরাস সামলানোর জন্য, তাই মার্চ মাসেই এই কংগ্রেস আয়োজন করা সম্ভব হবে না।
চিনে ইতিমধ্য়েই করোনায় আক্রান্তের সংখ্য়া ১৫০০ ছাড়িয়েছে। যদিও নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর হার অনেকটাই কমেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে দুমাস ধরে চলথে থাকা এই করোনাআতঙ্ক সেখানে বিন্দুমাত্র কমেনি। উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে শুধু চিনই নয়, বিশ্বের আরও ২৫টি দেশ আক্রান্ত। চিনের যে চিকিৎসক করোনাভাইরাস নিয়ে সবার আগে সরকারকে সতর্ক খেয়ে কার্যত একঘরে হয়েছিলেন, তাঁর মৃত্য়ু হয়েছে দিনসাতেক আগে। এবার খবর এল, সে দেশের কমপক্ষে সতেরোশ-র বেশি স্বাস্থ্য় কর্মী বা 'মেডিকেল স্টাফ' করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
চিনের স্বাস্থ্য় দফতর থেকে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত সেখানে সেখানে ১৭১৬ জন স্বাস্থ্য়কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। যা মোট করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্য়ে ৩.৮ শতাংশ। যাঁদের মধ্য়ে ছ-জন ইতিমধ্য়েই মারা গিয়েছেন।
ন্য়াশানাল হেলথ কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হুবেই প্রদেশের ১৫০২ জন স্বাস্থ্য়কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। যার মধ্য়ে ১০১২ জনই আক্রান্ত হয়েছেন উহানে। চিনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৮০তে। যদিও দাবি করা হচ্ছে, ওই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্য়া আর আগের মতো বাড়ছে না। কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রিত হয়েছে এই রোগের সংক্রমণ।
এদিকে, এতজন স্বাস্থ্য়কর্মী কেন আক্রান্ত হলেন করোনাভাইরাসে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মনে করা হচ্ছে, রোগীদের সংস্পর্শে আসাতেই এতজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠেছে, যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্য়বস্থা নেওয়ার পরও এতজন কীভাবে আক্রান্ত হলেন। আর কেনই বা আক্রান্তদের মধ্য়ে ছ-জন মারা গেলেন।
প্রসঙ্গত, সরকারিভাবে চিনের হুঁশিয়ারির আগেই যিনি বিশ্বকে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক করেনে, সেই চিকিৎসক সি ওয়েনসিয়াংয়ের মৃ্ত্য়ু হয়েছে গত সপ্তাহে। এই ভাইরাস নিয়ে সতর্ক করায় ওয়েনসিংয়াংকে রীতিমতো সরকারি রোষে পড়তে হয়েছিল। এবার একসঙ্গে এতজন স্বাস্থ্য় আধিকারিকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় দৃশ্য়তই অস্বস্তিতে পড়ল চিন।