কিয়েভ আর খারকিভ শহর শেষ যুদ্ধ দেখেছিল ১৯৪১ সালে। হিটলারের বিজয় রথ এই দুই শহরে পা রেখেছিল। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের রেড আর্মির সঙ্গে সেই সময় প্রবল যুদ্ধ হয়েছিল। গত শতকের মাঝামাঝি সময় হিটলার শুরু করেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সেই সময়ই বোমা আর গোলাগুলির আওয়াতে কেঁপে উঠেছিল কিয়েভ আর খারকিভ।
রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) সঙ্গে এবার তুলনা করা হচ্ছে হিটলারের (Hitler) কিয়েভ আর খারকিভ (Kyiv and Kharkiv) আন্দোলন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া (Russia) তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তারপর থেকে এপর্যন্ত যুদ্ধে প্রায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের (Ukraine) অধিকাংশ বড় শহর। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এপর্যন্ত ক্রমাগত গোলা ও বোমা বর্ষণের কারণে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ইউক্রেনের সাজানো গোছানো দুটি শহর কিয়েভ ও খারকিভ। নাগরিকদের হৃদকম্পন বাড়িয়ে ক্রমাগত বেজে চলেছে সাইরেন। সোমবার থেকেই রুশ সেনার মূল টার্গেট হয়ে দাঁড়িয়ে খারকিভ। এই শহরে গোলাবর্ষণে এপর্যন্ত প্রায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানী কিয়েভ থেকে মাত্র ৪০ মাইল দূরে অপেক্ষা করে রয়েছে রাশিয়ান সেনার কনভয়। তারই আশপাশে কয়েকটি সরকারি ভবন থেকে বার হচ্ছে আগুন। মনে করা হচ্ছে ধ্বংসলীলা চালাতে চালাতে এগিয়ে আসছে রুশ সেনা বাহিনী।
অথচ এই কিয়েভ আর খারকিভ শহর শেষ যুদ্ধ দেখেছিল ১৯৪১ সালে। হিটলারের বিজয় রথ এই দুই শহরে পা রেখেছিল। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের রেড আর্মির সঙ্গে সেই সময় প্রবল যুদ্ধ হয়েছিল। গত শতকের মাঝামাঝি সময় হিটলার শুরু করেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সেই সময়ই বোমা আর গোলাগুলির আওয়াতে কেঁপে উঠেছিল কিয়েভ আর খারকিভ। রুশ সেনার ক্রমাগত গোলা বর্ষণ আবারও সেই স্মৃতিতে উস্কে দিচ্ছে।
১৯৪১ সালের সেপ্টেম্বরে জার্মান বাহিনী কিয়েভে প্রবেশ করেছিল। দুই দিনের মধ্যে ৩০ হাজারেরও বোশি ইহুদিকে হত্যা করেছিল। পরবর্তী কয়েক মাস এই শহরে তাণ্ডব চালিয়েছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনী। সেই সময় সবমিলিয়ে প্রায় কয়েক লক্ষ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছিল জার্মান সেনা।
পরের মাসে অর্থাৎ ১৯৪১ সালে খারকিভে প্রবেশ করেছিল জার্মান বাহিনী। সেখানেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল হিটলারের। জার্মান বাহিনী মাত্র চার দিনে এই শহরটি দখল করেছিল।
ইউক্রেনের নেতারা বর্তমান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের সঙ্গে ২০২২ সালের রাশিয়ান আক্রমণের তুলনা করছেন। শুক্রবার সকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তুলে বলেছেন, আজ রাতে রাশিয়া কিয়েভ শহরের আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে। প্রবল বোমা বর্ষণ ররেছে। যার সঙ্গে হিটরারের আক্রমণেরই তুলনা করা যায়। পুতিনের এই হামলার বিরুদ্ধে তিনি রাশিয়ানদের রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধ করারও আবেদন জানিয়েছেন।
একইভাবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, শেষবারের মত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ আক্রান্ত হয়েছিল ১৯৪১ সালে। সেই সময় নাৎসি জার্মান বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছিল এই শহরে। ইউক্রেন সেই হামলা প্রতিহত করেছে। এই হামলাও রুখে দেবে দেবে। রাশিয়াকে গোটা বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।