
আলোচনা বা যুদ্ধ- যেকোনও কোনও কিছুর মাধ্যমে রাশিয়া ইউক্রেনে (Russian-Ukraine)লক্ষ্য পুরণ করবে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়ের ম্যাক্রোঁ ও তুরস্কের প্রধান এদোরগানের সঙ্গে কথা বলার সময় এমনটাই জানিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ladimir Putin)। যুদ্ধের ১১তম দিনেও (11 Days) প্রবল ধ্বংসলীলা দেখার পরেই ইউক্রেন থেকে পিছিয়ে আসতে রাজি নন পুতিন। এদিন তাঁর কথাতেই তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের ৩৫১ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয় দাবি করেছে ৪৯৮ জন রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্র সংঘের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রায় দেড় কোটিরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভার শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে প্রচুর মানুষ। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিবাদ জানানোর জন্য এখনও পর্যন্ত রাশিয়া ১১০০ জনকে আটক করেছে।
রবিবার পুতিন ফরাসি প্রসেডিন্টে ইমানুয়ের ম্যাক্রোর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি মারিউপোল ইস্যুতে ইউক্রেন সরকারকেই দাবি করেছেন। এই শহর থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যেতে কিয়েভ ব্যার্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। গতকালই এই শহরে পাঁচ ঘণ্টার যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেছিল রুশ সেনা। অন্যদিকে এদিন পুতিন জানিয়েছেন রাশিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লিতে হামলার কোনও পরিকল্পনা নেই। অন্য়দিকে তিনি এদিন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এদোরগানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যুদ্ধ তখনই থামবে যখন ইউক্রেন সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া বন্ধ করবে। কিয়েভ মস্কোর সমস্ত দাবি মেনে নিলেই যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে বলেও পুতিন জানিয়েছেন। আগেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট মস্কোতে রাশিয়ার প্রসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে তিনি ইউক্রেন যান। কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে। তারপরই তিনি দেশে ফেরেন। তিনি জানিয়েছেন শান্তি স্থাপনের জন্য তিনি একটি চেষ্টা করেছিলেন। এটি তাঁর নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে তিনি চেষ্টা করেছিলেন।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের সমস্যা সমাধানের জন্য দুই দেশের প্রতিনিধি দল এপর্যন্ত দুটি বৈঠক করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। তৃতীয় দফার বৈঠক অনুষ্ঠীত হবে ৭ মার্চ অর্থাৎ সোমবার। তবে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের ওপর নো-ফ্লাই জোন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে বিবাদ বাড়ছে। জেলেনস্কি ইউক্রেনের ওপর নো-ফ্লাইজোন চালু করার দাবি জানিয়েছেন। যার প্রতিবাদ করেছেন পুতিন।
অন্যদিকে রুশ বাহিনী ঘিরে রেখেছে মারিউপোলকে। এই বন্দর শহর দখল করতে পারলে কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়া অনেকটাই এগিয়ে যাবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন রাশিয়া বন্দর শহর ওডেসায় বোমা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে হামলা চালাতে পারে।
ইউক্রেনের দাবি রাশিয়া গোটা দেশের ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া এখনও পর্যন্ত দাবি করেছে এটি সামরিক অভিযোগ। ইউক্রেনের সাধারণ মানুষদের ওপর বল প্রয়োগ করার কোনও ইচ্ছে রুশ সেনার নেই। কিন্তু ইউক্রেনের দাবি রুশ বাহিনী প্রশাসনিক ভবনে হামলার পাশাপিশ আবাসিক এলাকাতেও হামলা চালাচ্ছে।
যুদ্ধের ১১দিনে খারকিভ, মাইকোলাইভ, চেরনিহিভ ও সুমিতে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনার মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে রুশ সেনা দখল করছে খেরসন শহরটি।