শুধু কি হিমশৈল নাকি টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পিছনে রযেছে অন্য কারণ, রহস্য বাড়ল নতুন গবেষণায়

আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক

এমনটাই এতদিন মনে করা হত

কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এল সম্পূর্ণ নতুন তথ্য

টাইটানিক জাহাজের সলিল সমাধির পিছনে তাকতে পারে মহাজাগতিক কারণ

 

amartya lahiri | Published : Sep 21, 2020 11:48 AM IST / Updated: Sep 21 2020, 05:21 PM IST

বিশ্বখ্যাত হলিউডি সিনেমার দৌলতে প্রায় সকলেই জানেন, টাইটানিক নামের উনবিংশ শতকের একেবারে প্রথম দিকের বিখ্য়াত জাহাজটির সলিল সমাধি ঘটেছিল আইসবার্গ অর্থাৎ বরফের ডুবো পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে। তবে, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে অন্য তথ্য। সেই গবেষণা অনুযায়ী জাহাজটি একটি আইসবার্গের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ডুবে গিয়েছিল ঠিকই কিন্তু সেই সংঘর্ষের পিছনে ছিল সম্ভবত অন্য এক মহাজাগতিক ঘটনা।

১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। তারপর থেকে সেই সময়ের কারিগরি বিদ্যার অন্যতম নজির এই জাহাজটি কীভাবে ডুবে গিয়েছিল তাই নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, এমনকি সেই ঘটনার ১০০ বছর পরও চলছে গবেষণা। সম্প্রতি ওয়েদার জার্নালে একটি নিবন্ধে স্বাধীন গবেষক, মিলা জিনকোভা জাবি করেছেন, বিখ্যাত জাহাজটির ডুবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভবত অন্যতম ভূমিকা ছিল সোলার ফ্লেয়ার অর্থাৎ সৌরশিখার।

সূর্যপৃষ্ঠের কোনও  অংশে তাপের আকস্মিক বৃদ্ধি ঘটলে তৈরি হয় সৌরশিখা। যার প্রভাবে পৃথিবীতে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং উপগ্রহগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল বলে দাবি করেছেন জিনকোভা।

তিনি জানিয়েছেন যে সময়ে টাইটানিক-এর ওই পরিণতি হয়েছিল সেই সময় উত্তর আটলান্টিক সাগরে ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের নির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সৌরশিখার প্রভাবেই পৃথিবীর শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পরে। তৈরি হয় ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়। এর ফলে জাহাজের দিক নির্ণয় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা তাতে দারুণ প্রভাবিত হতে পারে। কম্পাস তৈরি হয় চুম্বক দিয়েই, তাই ভূচৌম্বকিয় ঝড়ের জন্য কম্পাস টাইটানিককে ভুল পথে চালিত করে থাকতে পারে। যার ফলে বরফের ডুবো পাহাড়ের সঙ্গে ওই সংঘর্ষ ঘটেছিল।

এছাড়া, ,সংঘর্ষের পর জাহাজের ফোর্থ অফিসার যে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছিলেন, তাতেও তাদের প্রকৃত অবস্থানের থেকে ১৩ নটিকাল মাইল দূরের এক স্থানের অবস্থান দেওয়া ছিল। আবার সেই ভুল অবস্থানকে লক্ষ্য করে সাহায্য করতে যাচ্ছিল যে 'কার্পাথিয়া' জাহাজ, সেটিও অদ্ভূতভাবে কম্পাসের ভুল দিকনির্দেশনার কারণে জাহাজটির প্রকৃত অবস্থানের কাছে পৌঁছেছিল। যার জন্য লাইফবোটে থাকা অনেকের প্রাণ বেঁচেছিল। সেইসঙ্গে টাইটানিকের রেডিও-র সার্কিট জ্যাম-ও হয়েছিল। সরকারী প্রতিবেদন অনুসারে, অপেশাদার উৎসাহীরা ব্যবহারের ফলেই সার্কিট জ্যাম হয়েছিল। জিনকোভা অবশ্য দাবি করছেন, ভুল দিকনির্দেশ পেয়েও কার্পাথিয়া-র সঠিক অবস্থানে পৌঁছে যাওয়া, টাইটানিকের সিগন্যাল এবং দিকনির্দেশে ঝামেলার কারণ সেই রাতে উত্তর আটলান্টিকের একটি শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়, যা তৈরি হয়েছিল সৌরশিখার কারণে।

তবে, জিনকোভা জানিয়েছেন, তাঁর এই গবেষণার ফলাফলে অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা এতদিন পরে নিশ্চিতভাবে যাচাই করা অসম্ভব। তাই তিনি সম্ভাবনা হিসাবেই তাঁর এই তত্ত্বকে পেশ করেছেন।

Share this article
click me!