চিনে করোনার আতঙ্ক। কাঁকড়ার বাজারে তাই ব্য়বসায়ীদের আতঙ্ক। বাংলাদেশের বাগেরহাটে উৎপাদিত কাঁকড়ার ৮৫ শতাংশই রফতানি করা হয় চিনে। কিন্তু করোনা আতঙ্কে গত একমাস ধরে রফতানি বন্ধ। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ঘেরে থাকার কারণে মারা পড়ছে কাঁকড়া। । এখনও পর্যন্ত যার পরিমাণ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, গত একমাসে মারা গিয়েছে ৭০ শতাংশ কাঁকড়া। স্তূপাকৃতি হয়ে পড়ে রয়েছে মৃত কাঁকড়া। পচা কাঁকড়ার দুর্গন্ধে এলাকায় টেকাই দায়। চাষিরা ঘের থেকে কাঁকড়া তুলে এনে পাড়ে ফেলছেন। কিন্তু রফতানি বন্ধ থাকায় সেই কাঁকড়া কার্যত পড়ে পড়়ে মরছে।
কিছুদিন আগে অবধিও এই কাঁকড়া চাষ ছিল লাভজনক। তাই অনেকেই এসেছিলেন কাঁকড়া চাষ করতে। জেলার মৎস্য় দফতরও উৎসাহিত করেছিল চাষীদের। কাঁকড়া চাষ করে অনেকেই লাভের মুখ দেখেছিলেন। ধানসাগর এলাকার চাষি আলিম হাওলাদার জানান, "গতবছর প্রায় আট লাখ টাকা ঘরে তুলেছিলাম। কিন্তু এবার লাভ তো দূরের কথা, যে টাকা বিনিয়োগ করেছি, তা-ই ঘরে তুলতে পারবো না।"
কাঁকড়াচাষিরা বলছেন, দীর্ঘদিন ঘেরে পড়ে থাকার কারণে ডিমওয়ালা মা কাঁকড়া সংখ্য়ায় বেশি মারা পড়ছে। এর মধ্য়েই বিভিন্ন ঘেরের ৭০ শতাংশ কাঁকড়া মরে গিয়েছে। আসলে আড়াই থেকে তিনমাসের মধ্য়ে কাঁকড়া সম্পূর্ণ রূপ নিয়ে নেয়। এরমধ্য়েই তাকে বিক্রি করে দিতে নয়। নইলে সে মরে যায়। কারণ, এই সময়ের মধ্য়ে মা কাঁকড়ার পেট ডিমে ভরতি থাকে। আর পুরুষ কাঁকড়ার খোলস পরিবর্তনের সময় এসে যায়। মা কাঁকড়া এই সময়ে ডিম ছাড়ার জন্য় আর পুরুষ কাঁকড়া খোলস ছাড়ার জন্য় সাগর ও নদীতে চলে যায়। বদ্ধ জায়গায় থাকলে তারা বাঁচে না।
জানা গিয়েছে, বাগেরহাট থেকে প্রতিমাসে গড়ে ২০০টন মতো কাঁকড়া রফতানি হয়। যার ৮৫ ভাগই যায় চিনে। জানুয়ারির ২২ তারিখ শেষবারের মতো রফতানি হয়েছিল। তারপর থেকেই রফতানি বন্ধ।