সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এসব বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় অনেক নারী মুখ থেকে হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। একইভাবে আমিনির নিজের শহর সাক্কাজেও মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
শনিবারের এক মৃত্যুতে দেশ জুড়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ। ইরানে পুলিশি হেফাজতে প্রাণ হারানো মাহসা আমিনির বিচার পাওয়ার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। অনেক জায়গায় মানুষ রাস্তায় নেমেছে, এমনকি প্রতিবাদী নারীরাও মুখ থেকে হিজাব খুলে তাদের তীব্র প্রতিবাদ দেখিয়েছে। ইরানে, ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি হিজাবের নিয়মের বিরুদ্ধে যাওয়ায় পুলিশি অত্যাচারে প্রাণ হারান বলে দাবি প্রতিবাদকারীদের।
কয়েক মাস আগে তাকে হিজাব খুলে ফেলার জন্য প্রকাশ্যে গ্রেফতার করা হয় এবং সরকারের মরাল পুলিশ তার ওপর অকথ্য নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের দাবি পুলিশ হেফাজতে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয় এবং মাহসা কোমায় পড়ে প্রাণ হারায়।
একই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন শত শত মানুষ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মহিলারাও যোগ দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এসব বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় অনেক নারী মুখ থেকে হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। একইভাবে আমিনির নিজের শহর সাক্কাজেও মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের তরফে জানা গিয়েছে বেশ কিছু বিক্ষোভের ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। এর মধ্যে একটিতে কবরস্থানের বাইরে মানুষের ভিড়। মাসিহ আলিনেজাদ, একজন ইরানি সাংবাদিক এবং কর্মী, তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বিক্ষোভের ছবি শেয়ার করেছেন। অন্য একটি টুইটে তিনি লিখেছেন যে এটিই আসল ইরান, মাহসা আমিনিকে কবর দেওয়ার পর ইরানের সাক্কেজে নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। এতে বহু আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। প্রথমে মোরাল পুলিশ একটি ২২ বছরের মেয়েকে হত্যা করেছিল এবং এখন শোকার্ত মানুষের বিরুদ্ধে বন্দুক ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইরানে, মহিলাদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক এবং এই নিয়ম না মানা হলে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হতে পারে। মাহসার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটে ১৩ই সেপ্টেম্বর। মাহসা আমিনি (২২) তার পরিবারকে দেখতে তেহরানে এসেছিলেন। সে হিজাব পরেনি। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে মাহসাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের তিনদিন পর অর্থাৎ ১৬ই সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান। এরপরই বিষয়টি আলোচনায় আসে।
মেয়েটির পরিবার ও সমাজকর্মীরা তার সন্দেহজনক মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচার ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলেছে, আমিনির দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হয়েছে এবং তার মরদেহ মেডিকেল পরীক্ষার অফিসে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে টানাটানি করেছে।