
দিল্লি-সাংহাই ফ্লাইট: বহু বছরের অপেক্ষার পর ভারত ও চিনের মধ্যে বিমান যাত্রা নিয়ে একটি বড় এবং স্বস্তির খবর সামনে এসেছে। চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স ঘোষণা করেছে যে তারা ২ জানুয়ারি থেকে দিল্লি এবং সাংহাইয়ের মধ্যে দৈনিক নন-স্টপ ফ্লাইট শুরু করতে চলেছে। এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন ভারত-চিন বিমান যোগাযোগ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে এবং যাত্রীদের চাহিদাও দ্রুত বাড়ছে।
আসলে, দিল্লি-সাংহাই রুটটি পাঁচ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর নভেম্বর ২০২৫-এ পুনরায় চালু করা হয়েছিল। প্রথমে এই ফ্লাইট সপ্তাহে মাত্র তিন দিন চলছিল। কিন্তু যাত্রী এবং ভ্রমণ শিল্পের কাছ থেকে जबरदस्त সাড়া পাওয়ার পর, এয়ারলাইনটি তাদের কৌশল পরিবর্তন করে এবং সরাসরি দৈনিক ফ্লাইট শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
চায়না ইস্টার্নের শীতকালীন সময়সূচী অনুযায়ী, ফ্লাইট MU564 দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সন্ধ্যা ৭:৫৫-এ ছাড়বে এবং পরের দিন ভোর ৪:১০-এ সাংহাইয়ের পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। অন্যদিকে, ফিরতি ফ্লাইট MU563 সাংহাই থেকে দুপুর ১২:৫০-এ রওনা হয়ে সন্ধ্যা ৫:৪৫-এ দিল্লি পৌঁছাবে।
এয়ারলাইনটি স্পষ্ট করেছে যে তারা ভারতে নিজেদের উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করতে চায়। এই লক্ষ্যে কলকাতা-কুনমিং রুট পুনরায় চালু করা এবং মুম্বাই-সাংহাইয়ের মধ্যে একটি নতুন রুট চালু করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। এর ফলে ভারত ও চিনের মধ্যে ভ্রমণ এবং ব্যবসা উভয় ক্ষেত্রেই বড় সুবিধা হতে পারে।
চায়না ইস্টার্ন এখন ইন্টারলাইন কানেক্টিভিটিও দিচ্ছে। এর মানে হল, ভারতের ৩৯টি শহর থেকে যাত্রীরা দিল্লির মাধ্যমে সাংহাই এবং তারপর চিন ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে একটি মাত্র টিকিটেই সহজে যাত্রা বুক করতে পারবেন। এই সুবিধাটি বিশেষ করে ব্যবসায়ী এবং পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে COVID-19 এবং গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর ভারত-চিন সম্পর্ক বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। চার বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিরোধ চলে। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরে দেপসাং এবং ডেমচোকের মতো শেষ বিরোধপূর্ণ জায়গাগুলিতে ডিসএনগেজমেন্ট চুক্তি হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাক্ষাৎ সম্পর্ককে একটি ভালো দিকে চালিত করে।
গত কয়েক মাসে দুই দেশ সম্পর্ক सुधारने জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে কৈলাস মানসরোবর যাত্রা এবং এখন ফ্লাইট পরিষেবা বাড়ানোও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে দৈনিক ফ্লাইট শুরু হওয়া কেবল একটি ভ্রমণ সুবিধা নয়, এটি ভারত-চিন সম্পর্কের মধ্যে ধীরে ধীরে উষ্ণতা ফেরারও একটি ইঙ্গিত। সব মিলিয়ে, জানুয়ারি থেকে দিল্লি-সাংহাইয়ের মধ্যে দৈনিক নন-স্টপ ফ্লাইট শুরু হওয়া যাত্রী, ব্যবসায়ী এবং দুই দেশের সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।