
ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ২ বছর: ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের দু'বছর পূর্ণ হয়েছে। ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাস জঙ্গিরা ইজরায়েলে হামলা চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা করেছিল এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে পণবন্দী করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল। এর পরের দিনই ইজরায়েলি সেনা 'অপারেশন সোর্ডস অফ আয়রন' শুরু করে। তখন থেকে ইজরায়েল গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। গত দুই বছরে গাজার ৭৫%-এর বেশি ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও, ইজরায়েল শপথ করেছে যে হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত সামরিক অভিযান বন্ধ হবে না।
ইজরায়েলি হামলায় গাজার বেশিরভাগ ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শহরজুড়ে শুধু ধুলোর ঝড়। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় প্রায় ৫.৪০ কোটি টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে আছে। একটি অনুমান অনুযায়ী, এই বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে ১০ বছর সময় লাগবে।
জাতিসংঘের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজার ৭৫%-এর বেশি ভবন ভেঙে পড়েছে। ক্ষতির কথা বললে, এখন পর্যন্ত সেখানে ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। গাজায় প্রায় ৯৫ শতাংশ হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে। গাজার বেশিরভাগ এলাকা বর্তমানে ইজরায়েলি সেনার দখলে।
গত দুই বছরে ইজরায়েল হামাসের যে বড় জঙ্গিদের হত্যা করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে ইসমাইল হানিয়া, ইয়াহিয়া সিনওয়ার, নুখবা ফোর্সের হামজা ওয়ায়েল মুহাম্মদ আসাফা, সালেহ আল-আরুরি, ইসাম দিব আবদুল্লাহ আল-দালিস, মুহাম্মদ দেইফ, মারওয়ান ইসা এবং মাহমুদ জাহার। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের আগে হামাসের কাছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার যোদ্ধা ছিল। এখন তাদের সংখ্যা মাত্র ৬-৭ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। এত ধ্বংসযজ্ঞ এবং ২ বছর কেটে যাওয়ার পরেও হামাস এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। যদিও তাদের বড় বড় নেতারা নিহত হয়েছেন, তবুও এই জঙ্গি সংগঠনটি গাজায় এখনও সক্রিয় রয়েছে।
গত দুই বছরে ইজরায়েল গাজার মানচিত্রই বদলে দিয়েছে। সেখানকার ৭৫ শতাংশ এলাকা এখন তাদের দখলে। শহরের ৭৫%-এর বেশি ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গত দুই বছরে ৬৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং ১.৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ হাজার শিশু রয়েছে। শহরের ৯০% স্কুল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা এই তথ্য থেকেই বোঝা যায় যে, শহরের মোট ২৩ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ৫ লক্ষ মানুষ অনাহারে ভুগছে। উত্তর ও দক্ষিণ গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের ত্রাণ শিবিরে থাকতে হচ্ছে, যেখানে খাবার, ওষুধ এবং চিকিৎসার অভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।