
সিরিয়ায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদের সরকার বিদ্রোহীদের দ্বারা উৎখাত হওয়ার পর থেকে ইজরায়েল বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। ইজরায়েলি বিমানবাহিনী সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলিতে ভারী বোমা হামলা চালাচ্ছে যাতে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর বিপজ্জনক অস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে না পড়ে।
এই ধারাবাহিকতায় রবিবার রাতে ইজরায়েল সিরিয়ার উপকূলীয় টার্টাস অঞ্চলে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। ২০১২ সালের পর থেকে এই অঞ্চলে এটিই সবচেয়ে তীব্র বোমা হামলা। ইজরায়েল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের গুদাম সহ সামরিক ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করেছে।
ইজরায়েল সিরিয়ার ২৩তম বিমান প্রতিরক্ষা ব্রিগেডের ঘাঁটি এবং কাছাকাছি ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানে অত্যাধুনিক অস্ত্র মজুত করা হত। ইজরায়েল সিরিয়ায় ভূমিকম্প বোমা নামে পরিচিত শক্তিশালী বোমা ফেলেছে। এর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে ধরিত্রী। রিখটার স্কেলে তিন মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইজরায়েল দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে আসছে যাতে অত্যাধুনিক এবং শক্তিশালী অস্ত্র হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠীর হাতে না পড়ে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামলার উদ্দেশ্য হলো নিরাপত্তা হুমকি প্রতিহত করা এবং ইজরায়েলের উত্তর সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
সিরিয়ায় শেষ হয়েছে ২০১১ সাল থেকে চলছে গৃহযুদ্ধ
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বিদ্রোহীরা আসাদ সরকারকে উৎখাত করার সাথে সাথে সিরিয়ায় ২০১১ সাল থেকে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান হয়েছে। এই যুদ্ধে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। সিরিয়ার ক্ষমতায় বিদ্রোহীদের আসার ফলে ইজরায়েলের উদ্বেগ বেড়েছে। তাদের আশঙ্কা, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পড়তে পারে। এটি রোধ করার জন্য ইজরায়েল সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালিয়ে তার অস্ত্র ধ্বংস করছে।
ইজরায়েলের হামলা গোলান হাইটসের উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার বৃহত্তর কৌশলের সাথেও যুক্ত। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইজরায়েল গোলান হাইটস দখল করে নেয়। ১৯৮১ সালে তারা এই অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ করে নেয়। নেতানিয়াহুর সরকার সম্প্রতি গোলানে ইজরায়েলের জনসংখ্যা দ্বিগুণ করার জন্য ১১ মিলিয়ন ডলারের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ আরব দেশগুলি এর নিন্দা জানিয়েছে।