
নেদারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা মানুষের গলায় একটি নতুন অঙ্গ আবিষ্কার করেছেন। ২০২০ সালে নতুন ক্যান্সার স্ক্যানিং পরীক্ষা চালানোর সময়, গলার উপরের অংশে গভীরে অবস্থিত কিছু গ্রন্থি তারা আকস্মিকভাবে খুঁজে পান। এই আবিষ্কার মানব শারীরবিদ্যা সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বদলে দিতে পারে।
নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রন্থিগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে 'টিউবারিয়াল লালা গ্রন্থি' (tubarial salivary glands)। গবেষকরা মনে করেন, এগুলো নাকের পিছনের অংশকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের রেডিওথেরাপি চিকিৎসার মান উন্নত করতে এই আবিষ্কার সহায়ক হবে বলে তারা মনে করেন।
নেদারল্যান্ডস ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের গবেষকরা প্রস্টেট ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য PSMA PET-CT স্ক্যান পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। এই স্ক্যান পদ্ধতিতে, একটি তেজস্ক্রিয় যৌগ রোগীর শরীরে প্রবেশ করানো হয় এবং চিকিৎসকরা এটি শরীরের কোন অংশে যায় তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
সাধারণত প্রস্টেট টিউমার শনাক্ত করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হলেও, গবেষকরা নাকের পিছনের নাসোফ্যারিংক্সে (nasopharynx) দুটি অপ্রত্যাশিত স্থান উজ্জ্বলভাবে জ্বলতে দেখেন। প্রায় ১.৫ ইঞ্চি লম্বা এই গ্রন্থিগুলি ইতিমধ্যেই পরিচিত প্রধান লালা গ্রন্থির মতোই দেখতে ছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই নতুন গ্রন্থিগুলি ক্যান্সারের রেডিওথেরাপির সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করবে। রেডিওথেরাপির সময় ইতিমধ্যেই পরিচিত লালা গ্রন্থিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে, রোগীদের খাওয়া, গিলে ফেলা এবং কথা বলার মতো কাজে অসুবিধা হয়। নতুন গ্রন্থিগুলিতেও বিকিরণ পড়লে একই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
৭০০ জনেরও বেশি রোগীর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে, এই নতুন গ্রন্থিগুলিতে যত বেশি বিকিরণ পড়ে, তত বেশি সমস্যা রোগীদের হয়। তাই, এই নতুন গ্রন্থিগুলিকে সুরক্ষিত রেখে রেডিওথেরাপি দেওয়া হলে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে এবং রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে বলে গবেষকরা আশা করছেন।