৮.৮ মাত্রার কামচাটকা ভূমিকম্পের পরেও কেন বিধ্বংসী সুনামি নয়? উত্তর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা

Published : Aug 01, 2025, 09:42 AM IST
Screengrab of Drone Footage Showing Tsunami Flooding Town After Powerful Earthquake hits Kamchatka in Russia

সংক্ষিপ্ত

কামচাটকায় ভূমিকম্পের পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া -সহ একাধিক দেশে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। খালি করা হয়েছিল উপকূলবর্তী এলাকা। কিন্তু পরবর্তীকালে সুনামির সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। 

রাশিয়ার কামচাটকায় ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। জারি করা হয়েছিল সুনামির সতর্কতা। কিন্তু সুনামি হলেও তা ব্যাপক আকার নেয়নি। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল? আগামী দিনে কি প্রকৃতি নৃশংস তাণ্ডব দেখাবে? ইতিমধ্যেই এই জাতীয় প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। বিজ্ঞানীরাও এই ঘটনার কারণ খুঁজতে শুরু করেছেন। কারণ রাশিয়ার কামচটকা উপদ্বীপে তীব্র ভূমিকম্প হয়েছিল। তারই জেরে বিধ্বংসী সুনামি হতে পারে বলেও মনে করেছিলেন অনেকে। সুনামি হয়েছিল। শুধুমাত্র কামচটকায় ১৮-১৬ ফুট পর্যন্ত উঠেছিল ঢেউ। কিন্তু বাকি একাধিক জায়গায় সুনামি হলেও ঢেউ উঠেছিল দেড় ফুট থেকে ৩ ফুটের মধ্যে।

কামচাটকায় ভূমিকম্পের পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া -সহ একাধিক দেশে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। খালি করা হয়েছিল উপকূলবর্তী এলাকা। কিন্তু পরবর্তীকালে সুনামির সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতা অনুযায়ী সুনামি হয়নি। তেমনই দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যেই তার কারণ খুঁজতে শুরু করেছেন। প্রশান্ত মহাসাগরের কামচাটকা উপদ্বীপে বুধবার স্থানীয় সময়ে সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে ৮.৮ মিটার ভূমিকম্প হয়েছিল। কেঁপে উঠেছিল সমুদ্রের তলার মাটি। সমুদ্রের নিচে ভূমিকম্পের পরিণতি সুনামি। এই ঘটনার পরই একাধিক দেশে জারি করা হয়েছিল সুনামির সতর্কতা। কিন্তু কামচাটকা ছাড়া অন্যত্র তেমন ভয়ঙ্কর সুনামি দেখা যায়নি।

শক্তিশালী ভূমিকম্পের তালিকায় থাকবে কামচাটকার ভূমিকম্প। তবে সুনামি তেমব হয়নি। বিজ্ঞানীদের মতে ৩০ ফুটের ঢেউ উঠলেই সুনামি বিধ্বংসী হয় না। ঢেউয়ের কারণে ক্ষয়ক্ষতি কেমন হয় তাই খতিয়ে দেখতে হয়। বিজ্ঞানীদের কথায় যখনো কোনও ভূমিকম্প হয়, তখন সুনামির শক্তি প্রতিসমভাবে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে না। চ্যুতি কোনও সরল রেখায় ঘটে না। তাই বাইরের দিকে তার গতি সর্বত্র এক থাকে না। ভূমিকম্পের উৎসের আনুমানিক আকার এবং অবস্থানের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক ভাবে সতর্কতাগুলি জারি করা হয়ে থাকে। তবে ভূমিকম্পে কতটা জল স্থানচ্যুত হল, কোথায় তরঙ্গ ঘনীভূত হচ্ছে, তা এর মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায় না। গভীর সমুদ্রে জলের চাপের সেন্সরের একটি নেটওয়ার্ক সুনামির সতর্কতা জারি করতে সাহায্য করে। কিন্তু এই নেটওয়ার্ক তেমন শক্তিশালী নয়। তরঙ্গশক্তির সম্পূর্ণ জটিলতা এই নেটওয়ার্কে ধরা পড়ে না। এ ছাড়া, সমুদ্রতলের উচ্চতা এবং উপকূলরেখার উপরেও তরঙ্গের দৈর্ঘ্য নির্ভর করে থাকে।

কিন্তু ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প কেন বিধ্বংসী সুনামির জন্ম দিল না? ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে যে ভূমিকম্প হয়েছিল, রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৯.১। একই ভাবে, ২০১১ সালে জাপানের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের মাত্রাও ছিল ৯.১। প্রথম ক্ষেত্রে বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলে সুনামির তাণ্ডব কেড়েছিল প্রায় আড়াই থেকে তিন লক্ষ মানুষের প্রাণ। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে জাপানের সুনামিতে ১৩০ ফুট পর্যন্ত উঠেছিল ঢেউ। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ১৫ হাজার মানুষের। বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রতলে ৯.১ মাত্রার কম্পন এবং ৮.৮ মাত্রার কম্পনের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। কম্পনের মাত্রার স্কেলটি সরলরেখায় চলে না। মাত্রা সামান্য বেশি হলেও কম্পনের শক্তি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আমেরিকার ভূকম্পনবিদদের মতে, ৯.১ মাত্রার কম্পন ৮.৮ মাত্রার কম্পনের চেয়ে অন্তত তিন গুণ বেশি শক্তিশালী ছিল। তাই তা এত বেশি ধ্বংসাত্মক হয়েছিল।

একদল বিজ্ঞানীর কথায় ২০০৪ ও ২০১১ সালের তুলনায় এবারের ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল অনেক বেশি গভীরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২.০৭ কিলোমিটার গভীরে। তাই সমুদ্রতলের উলম্ব স্থানচ্যুতি কিছুটা কম হয়েছিল। তাই ভয়ঙ্কর সুনামি হয়নি।

 

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

LIVE NEWS UPDATE: India vs South Africa T20 - দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওপেন করবেন শুভমান গিল?
অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’, আর কোন কোন শব্দ পেল সেরা স্থান? জানুন এক ঝলকে