আইপিএলে লাগাতার তৃতীয় হার দিল্লি ক্যাপিটালসের। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৮৮ রানে হার শ্রেয়স আইয়রের দলের। প্রথমে ব্যাট করে ২১৯ রান করে হায়দরাবাদ। ৮৭ রানের ও ৬৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন ঋদ্ধিমান সাহা ও ডেভিড ওয়ার্নার। রান তাড়া করতে নেমে লাগাতার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দিল্লি। ১৩১ রানে শেষ হয় দিল্লি ক্যাপিটালসের ইনিংস। এদিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়র। বেয়ারস্টে না থাকায় এদিন ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন ঋদ্ধিমান সাহা। দুরন্ত শুরু করেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দুই ক্রিকেটার। রাবাডা ও নকিয়াদের উপর বিধ্বংসী প্রহার করেন ওয়ার্নার-ঋদ্ধিমান জুটি। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার শেষ হওয়ার আগেই অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ পূরণ করেন দুই ওপেনার।
পাওয়ার প্লে-র পরও দিল্লি বোলারদের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণাত্বক শট খেলতে থাকেন দুজন। এরমাঝে নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন ডেভিড ওয়ার্নার। নবম ওভারেই দলের শতরান পূরন হয়ে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের। কিন্তু দশম ওভারে প্রথম উইকেট পড়ে হায়দরাবাদের। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে আউট হন ওয়ার্নার। ৩৪ বলে ৬৬ রান করেন তিনি। ১০ ওভার শেষে সানরাইজার্সের স্কোর দাঁড়ায় ১১৩ রানে ১ উইকেট। এরপর ক্রিজে আসেন মণীশ পাণ্ডে। অপরদিক থেকে নিজের ইনিংস চালিয়ে যান ঋদ্ধি। অর্ধশতরানও পূরণ করেন তিনি। চালিয়ে যান আক্রমণাত্বক শটও। অর্ধশতরানও পূরণ করে ফেলেন। শেষে ১৫ তম ওভারে শেষ হয় ঋদ্ধির ইনিংস। নকিয়ার বলে ৪৫ বলে ৮৭ রান করে আউট হন তিনি।
১৫ ওভারের পর রানের গতিবেগ বাড়ানোর চেষ্টা করেন মণীশ পাণ্ডে ও কেন উইলিয়ামসন। বিশেষ করে আক্রমণাত্বক শট খেলেন মণীশ পাণ্ডে। ১৮ তম ওভারে ২০০ রানের গণ্ডী পেরিয়ে যায় সানরাই জার্স হায়দরাবাদ। এদিন দিল্লির তারকা বোলিং লাইনআপের কেউই তেমনভাবে দাগ কাটতে পারেননি। শেষ ওভারেও বজায় থাকে হায়দরবাদের অ্যাটাকিং ব্যাটিং। ২০ ওভার শেষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ২১৯। ৩১ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মণীশ পাণ্ডে ও ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন কেন উইলিয়ামসন। দিল্লি ক্যাপিটালসের টার্গেট ২২০ রান।
২২০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দিল্লি ক্যাপিটালস। খাতা না খুলেই সন্দীপ শর্মার বলে আউট হয়ে যান শিখর ধওয়ান। দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে দিল্লির। শাহবাজ নাদিমের বলে মাত্র ৫ রান করে আউট হয়ে যান মার্কাস স্টয়নিস। এরপর ইনিংসের রাস কিছুটা ধরার চেষ্টা করেন অজিঙ্কে রাহানে ও শেমরন হেটমায়ার। বেশ কিছু আক্রমণাত্বক শটও খেলেন দুজন। পাওয়া প্লে-র ৬ ওভার শেষে দিল্লি স্কোর দাঁড়ায় ৫৪ রানে ২ উইকেট। কিন্তু সপ্তম ওভারে পরপর দুটি উইকেট নিয়ে দিল্লিকে বড়সড় ধাক্কা দেন রাশিদ খান। দুই সেট ব্য়াটসম্যাবন হেটমায়ারকে বোল্ড করেন রাশিদ খান। তিনি করেন ১৬ রান। অপরদিকে ব্যক্তিগত ২৬ রানে রাশিদ খানের বললে এলবিডব্লু হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান অজিঙ্কে রাহানে। এরপর ইনিংসের রাশ ধরার চেষ্টা করেন ঋষভ পন্থ ও শ্রেয়স আইয়র। ১০ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ৭৩ রানে ৪ উইকেট।
তবে পন্থ ও শ্রেয়স আইয়রের পার্টনারশিপও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১২ তম ওভারে ৭৮ রানে পঞ্চম উইকেট পড়ে দিল্লির। বিজয় শংকরের বলে ৭ রান করে আউট হন শ্রেয়স আইয়র। ১৩ তম ওভারে দিল্লিকে ফের ধাক্কা দেন রাশিদ খান। ১ রান করে তার শিকার হন অ্যাক্সর প্যাটেল। এরপর ইনিস কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যান রাবাড ও পন্থ। তবে ১৬ তম ওভারে নটরাজনের বলে ৩ রান করে আউট হন রাবাডা। অপরদিক থেকে নিজের ইনিংস চালিয়ে যান ঋষভ পন্থ। কিন্তু তাকেও থামতে হয় ১৭ তমম ওভারে। সন্দীপ শর্মার বলে ৩৬ রান করে আউট হন তিনি। ১৭ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ১১০ রানে ৮ উইকেট। ১৮ তম ওভারে জেসন হোল্ডারের বলে আউট হন অশ্বিন। ৭ রান করেন তিনি। ১৯ তম ওভারে ১ রান করে নটরাজনের বলে নকিয়া আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় দিল্লির ইনিংস। ১৩১ রানে অল আউট হয়ে যায় দিল্লি ক্যাপিটালস। ৮৮ রানের বিশাল ব্যবদানে ম্যাচ জিতে শেষ চারে যাওয়ার আশা কিছুটা জিইয়ে রাখল ডেভিড ওয়ার্নারের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এই জয়ের ফলে ষষ্ঠ স্থানে উঠে আসল সানরাইজার্স, অপরদিকে তৃতীয় স্থানে নেমে আসল দিল্লি। প্রথম দুইতে উঠে এলল বিরাটের আরসিবি।