সঞ্জীব কুমার দুবে, পূর্ব মেদিনীপুর- মায়ের করোনা উপসর্গ, এদিকে মিললো না কোনও অ্যাম্বুলেন্স। গামছা বেঁধে মাকে বাইকে বসিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেল ছেলে। সরকারি গাফিলতির চরম নিদর্শন দেখল কোলাঘাটের এলাকাবাসী। এখন প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি ব্লক প্রশাসন আগে থেকে সচেতন নয়। যদিও ঘটনা প্রকাশ্য়ে আসতেই কোলাঘাটের বিডিও মদনমোহন মণ্ডলের মুখে অন্য় সুর।
জানা গিয়েছে, ওই যুবকের বাড়ির বড় দাদা ও বৌদির করোনা আক্রান্ত ভর্তি আছে পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতলে। বাড়ির সকলের লালা রস পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। কিন্তু মায়ের কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর রয়েছে। সেই মতে গ্রামীণ আশা কর্মীর সাহায্য চেয়েছিলেন কোলাঘাটের ছাতিনদা গ্রামের এই যুবক। স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসার কথা জানান। সেই মতন শনিবার ১১ জুলাই কোলাঘাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাকে নিয়ে বাড়ির ছোট ছেলে চিকিৎসার জন্য যায়। কিন্তু ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জানিয়ে দেয়, করোনা উপসর্গ রয়েছে। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালেটি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয় কোলাঘাট ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার ।
অপরদিকে, করোনা উপসর্গ থাকায় কোনও গাড়ি নিয়ে যেতে রাজি নয়। মেলেনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। কোলাঘাটের বিডিওর দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। ওই পরিবারের অভিযোগ, যে বিডিও সরকারি অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করে দিতে পারেননি। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ে বৃদ্ধা মহিলা। বাধ্য হয়ে বাড়ির ছোট ছেলে মায়ের চিকিৎসার জন্য নিজের ঝুঁকি নিয়ে মোটর বাইকে মাকে বসিয়ে গামছা বেঁধে পাঁশকুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সরকারি গাফিলতির চরম নিদর্শন দেখল কোলাঘাটের এলাকাবাসী।
যদিও কোলাঘাটের বিডিও মদনমোহন মণ্ডল জানান যে,' ব্লকের হাতে যে অ্যাম্বুলেন্স ছিল সেটা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ডাইভার মারা গিয়েছে। আর যেই গাড়িটি ছিল সেটা রোগী বহন করছে। কিছুক্ষণ আমি অপেক্ষা করতে বলি ।কিন্তু ওরা ধৈর্য হারিয়ে নিজেরাই নিয়ে চলে যায়। তবে এ ধরনের ঘটনা আর হবে না । আমরা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করছি যাতে রোগীরা দ্রুত পরিষেবা পায়।'
এখন প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি ব্লক প্রশাসন আগে থেকে সচেতন নয়। কেন এত বড় ব্লকে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। প্রতিদিন করোনা প্রভাব বাড়ছে কোলাঘাট ব্লক এলাকায়। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কেনইবা তার মা কে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মোটর বাইকে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য পারমিশন দেবে। কিংবা কেন আটকালো না সেই মুহূর্তে। প্রশ্ন তুলেছে আক্রান্তের বাড়ির আত্মীয়-পরিজন। এই মুহূর্তে মা ও ছেলে দুজনেই পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালেটি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।