লকডাউনেও তোলা আদায়ের অভিযোগ, কেশিয়াড়িতে পুলিশের তাড়া খেয়ে উল্টালো গাড়ি, আহতদের উদ্ধারের পরিবর্তে বেধড়ক পেটালো পুলিশ,ভাইরাল ভিডিও দেখে ক্লোজ করলেন পুলিশ সুপার
অমানবিক পুলিশি অত্যাচারের স্বাক্ষী থাকলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ি থানার কিয়ারচাঁদ নামক একটি গ্রামের মানুষ। ফল বোঝাই একটি গাড়ি উল্টে আহত হওয়া দুই ব্যক্তিদের বেধড়ক লাঠি পেটা করতে দেখা গেল দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার ও এক পুলিশ কনস্টেবলকে। শনিবার দুপুরের এই ঘটনা নিমেষে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আর মোবাইল বন্দি সেই ভিডিও দেখে হতবাক হয়ে গেছেন মানুষ। গাড়ি উল্টে তখনও জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন গাড়ির চালক। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে তার দুই সঙ্গীকে বেধড়ক লাঠি পেটা করছে পুলিশ। পুলিশের লাঠির আঘাতে এক যুবকের গাল ফেটে যেতেও দেখা গেছে। ঘটনার ছবি দেখেই পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্লোজ করলেন পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার ৷
প্রহৃতরা জানিয়েছেন, ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার কেশিয়াপাতা বাজারে ফলের দোকান রয়েছে। ফল কেনার উদ্দেশ্য নিয়েই তারা কেশিয়াড়ী গিয়েছিল। দুপুরে কেশিয়াড়ী থেকে আম নিয়ে ফিরছিল কেশিয়াপাতাতে। একটি ছোট টাটা এস গাড়িতে চালক ছাড়াও ছিলেন রাজীব অধিকারী ও শুভ হুই। ওই সময় কেশিয়াড়ি থানা এলাকার কিয়ারচাঁদ এলাকায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল ও সিভিক ভলেন্টিয়াররা তাদের পথ আটকে টাকা চায় বলে অভিযোগ।
রাজীব ও শুভ জানায় ফল কিনে নেওয়ায় তাঁদের কাছে আর টাকা নেই। এরপরই অভিযুক্ত কনস্টেবল জানায়, টাকা না দিলে তাঁদের মূল সড়ক ধরে যেতে দেওয়া হবেনা কারণ মূল সড়কে গাড়ি চালানোর আইন নেই লকডাউনের জন্য। রাজীব বলেন,আমরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে আমাদের টাকা চাইছিল সিভিক পুলিশরা ৷ বলা হয় গাড়ি চালানোর নিয়ম নেই এখন ৷ টাকা নি দিলে যেতে দেওয়া হবে না ৷ আমাদের কাছে টাকা না থাকায় দিতে পারবোনা বলতে আমাদের যেতে দেয় নি ৷ তাই অন্যপথ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই পেছন ধাওয়া করে ওই সিভিক পুলিশরা ৷ আমরা দ্রুত পালাতে গিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে পাল্টি খায় ৷
পুলিশ কর্মীরা আমরা পড়া থাকা অবস্থাতেই মারধোর করেছে ৷ পুলিশের মারের চোটে রাজীবের বাঁদিকের গাল কেটে বসে গেছে, রক্তাক্ত হয়েছে সে। অন্যদিকে শুভকে বেধড়ক পেটানোর পর তাকে পুলিশের পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়াতেও দেখা গিয়েছে। গোটা ঘটনার ভিডিও মোবাইল বন্দি করে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তাঁরাই দাবি করেছেন লকডাউন পর্বেও এভাবেই তোলা আদায় হচ্ছে।
ঘটনার পর গ্রামের স্থানীয় কিছু বাসিন্দারাই পড়ে থাকা ফলগুলি ঝুড়িতে তুলে দেয়। তাঁদেরই উদ্যোগে কেশিয়াপাতা হাসপাতালে পাঠানো হয় চালককে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তবে ঘটনার ছবি ভাইরাল হতেই পদক্ষেপ নেন পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার ৷ তিনি বলেন- বিষয়টি দেখে কেশিয়াড়ী থানাকে ব্যাবস্থা নিতে বলেছি ৷ তবে যেভাবে কাজটা করা হয়েছে তা গ্রহন যোগ্য নয় ৷ আমরা ওই পুলিশ কর্মীদের পুলিশ লাইনে ক্লোজ করেছি ৷ বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে ৷