
Durga Puja 2025: ঝাড়গ্রাম শহরের কাছেই চিল্কিগড়ে ডুলুং নদীর ধারে কনক দুর্গা মন্দির। সারা বছরই দেবীর আরাধনা জারি থাকে এখানে। এই দুর্গা অশ্বারোহিণী, চতুর্ভুজা । অত্যন্ত জাগ্রত এই দেবীর কাছে বহু মানুষ মানত পূর্ণ হলে পুজো দিয়ে যান। তবে দুর্গাপুজোর চার দিন বিশেষ রীতি আচার মেনে পুজো চলে ঝাড়গ্রামের কনক দুর্গা মন্দিরে। এই চার দিন দেবীকে হাঁসের ডিম, মাছ পোড়া, শাক ভাজা ও পান্তা ভাতের ভোগ নিবেদন করা হয়। অষ্টমীর রাতে মন্দিরে পাতকুয়োর সামনে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। নবমীর অন্নভোগের আগে বলির মাংস নতুন মাটির হাঁড়িতে সেদ্ধ করে রাখা হয়। অষ্টমী পুজোর পর গভীর রাতে জঙ্গলের ভিতরে বলির আয়োজন করা হয়। তিথি-নক্ষত্র মেনেই বলি দেওয়া হয়। সেখানে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার থাকে না।
চিল্কিগড়ে মত্তগজ রাজবংশের গোপীনাথ সিং এই পুজোর প্রতিষ্ঠা করেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। চিল্কিগড়ের প্রায় ভেঙে পড়া যে প্রাচীন মন্দির রয়েছে তার পশ্চিমপ্রান্তের দালানে এক সময় নরবলি হত। সেই রক্তে পুজো হত কনকদূর্গার। সময়ের সঙ্গে নরবলি বন্ধ হয়ে চালু হয়েছে মোষ বলির প্রথা। মহাষ্টমীতে হাঁসের ডিমের ভোগ দেওয়া হয়। নতুন মাটির হাঁড়িতে জল ও অন্যান্য সামগ্রী ভরে শালপাতা দিয়ে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে উনুনে চাপিয়ে দেওয়া হয়। উনুনে তিনটি কাঠে আগুন জ্বেলে ঘরের দরজা তালাচাবি দিয়ে বন্ধ করা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস দেবী স্বয়ং এসে এই ভোগ রান্না করেন।
চিল্কিগড়ে গিয়ে পৌঁছলেই মনে হবে প্রকৃতি তার সব রূপ যেন ঢেলে দিয়েছে। নদী, ছায়াঘন জঙ্গল, গাছে গাছে রঙবেরঙের প্রজাপতি, কী নেই সেখানে! সেই সঙ্গেই আকর্ষণ জঙ্গলের মধ্যে কনক দুর্গা মন্দির। ডুলুং নদী এবং জঙ্গলের টানে এখানে বছরভর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু রাতে থাকার ঠিকঠাক ব্যবস্থা না থাকায় মুখ ফেরাচ্ছিলেন অনেকে। এবার সেই ‘কালিমা’ ঘুচিয়ে নবরূপে তৈরি চিল্কিগড়। জঙ্গল লাগোয়া অতিথিশালা রয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে মন্দির চত্বরে সৌন্দর্যায়নের কাজও হয়েছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।