
চাণক্য মানুষের জীবনের নানা দিক নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। অর্থনীতির নীতিমালা বর্ণনা করে অর্থশাস্ত্র রচনা করেছিলেন। তার প্রতিটি কথা যদি কেউ মেনে চলে, তাহলে সে জীবনে সফলতা অর্জন করবে। স্বামী-স্ত্রীর সুখের জন্য চাণক্য অনেক উপদেশ দিয়েছেন। বিবাহের ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আধুনিক সমাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে। স্ত্রীর বয়স স্বামীর চেয়ে বেশি, এমনটাও আমরা দেখতে পাই। তবে সব সম্পর্ক সফল হয় না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে চাণক্য বয়সের ব্যবধান কত হওয়া উচিত সে বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। তার মতে, এই বয়সের ব্যবধান থাকলে সম্পর্ক সুন্দর হবে এবং তারা সারা জীবন একসাথে থাকবে।
চাণক্যের মতে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান খুব কম বা খুব বেশি হওয়া উচিত নয়। বয়সের ব্যবধান বেশি হলে জীবনে অনেক সমস্যা আসতে পারে। বিবাহের পর যদি তাদের মধ্যে মিল না হয়, তাহলে সম্পর্ক ঠিক করা কঠিন হয়ে পড়ে। চাণক্যের মতে, একজন বৃদ্ধের কখনোই অল্প বয়সী মেয়েকে বিয়ে করা উচিত নয়। তার বয়সের কাছাকাছি বয়সী কাউকে বিয়ে করা উচিত।
চাণক্যের মতে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান বেশি হলে তাদের সম্পর্ক শীঘ্রই ভেঙে যেতে পারে। স্বামীর বয়স বেশি হলে স্ত্রীর জীবন অশান্তিতে ভরে যায়। সে বৈবাহিক জীবনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাদের সম্পর্ক বেশিদিন টিকবে না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হওয়া উচিত। তাহলেই তাদের সম্পর্ক দৃঢ় হবে।
অনেকে দেখেছেন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ১০ বছরের ব্যবধান। এত বয়সের ব্যবধান তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব বৃদ্ধি করে। একজন উদ্যমী হলে অন্যজন স্থবির হতে পারে। তাই ১০ বছরের ব্যবধানে বিয়ে না করাই ভালো।
বিয়ে হল জীবনের একজন সঙ্গী পাওয়া। এখানে একে অপরের জন্য ভাবার ক্ষমতা থাকতে হবে। একে অপরের উপর নির্ভর করে বাঁচতে হবে। কারো অসুস্থ হলে অন্যজন তাকে সেবা করার মতো বয়সে থাকা উচিত। তাই বয়সের ব্যবধান ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হওয়া উচিত বলে চাণক্য বলেছেন। এই বয়সের ব্যবধানে বিয়ে হলে তারা ভালোবাসায় ভরে থাকবে এবং বয়সের ব্যবধান তাদের উপর কোন প্রভাব ফেলবে না।
অনেকে একসাথে পড়াশোনা করে বিয়ে করেন। অর্থাৎ একই বয়সের লোকেরা বিয়ে করে। এই ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে একই রকম উদ্যম, চিন্তাভাবনা এবং মনোভাব থাকার সম্ভাবনা থাকে। এমন অবস্থায় দুজনেই উদ্যমী হলে তাদের সম্পর্ক টিকবে না। তাই কিছুটা বয়সের ব্যবধান থাকা প্রয়োজন। দুজনের চিন্তাভাবনা উদ্যমী হলে তারা খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেয়। তাই বয়সের ব্যবধান তাদের চিন্তাভাবনাকেও প্রভাবিত করে। একজন উদ্যমী হলে অন্যজন তার উদ্যম এবং তাড়াহুড়ো কমিয়ে আনবে। তাই স্বামী যদি স্ত্রীর চেয়ে ৩ থেকে ৫ বছর বড় হয়, তাহলে পরিবারটি সুখী হবে।