
Diwali 2025: শান্তিপুরের বামা কালী পুজোয় কালী প্রতিমাকে একটি বাঁশের মাচায় স্থাপন করা হয়। এরপর অগণিত ভক্তরা সেই মাচাটি কাঁধে নিয়ে লাফাতে শুরু করেন, যার ফলে মনে হয় যেন স্বয়ং মা ভক্তদের মাঝে নাচছেন। এই উদ্দাম নৃত্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান। জগন্নাথদেব যেমন ভক্তদের ডাকে সাড়া দিয়ে বছরের একটি বিশেষ দিন নিজের মন্দির ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ভক্তদের মধ্যে, ঠিক তেমনই শান্তিপুরের বামাকালীকে নিয়ে রীতিমতো নাচ গান হয় পথ জুড়ে। তবে শুধু ভক্তরা নন, ভক্তদের সঙ্গে মা নিজেও নাচেন। এই অসাধারণ দৃশ্য দেখার জন্য বহুদূর থেকে মানুষ আসেন শান্তিপুরে। শান্তিপুরের অন্যান্য পুজো বেশ কিছুদিন চললেও বহু বছরের ঐতিহ্য মেনে পুজোর পরের দিনেই বিসর্জনের আয়োজন করা হয় বামাকালীর। রাতের অন্ধকারে মায়ের এই নাচ দেখলে যেন গায়ে কাঁটা দেয়। ভক্তদের হাতে জ্বলতে থাকা মশালের আলোয় মাকে যেন দেখতে লাগে অপরূপা।
পুজোর পর বিসর্জনের সময় প্রতিমা যখন মন্ডপ থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়, ঠিক তখন একটি বিশেষ স্থানে এনে শুরু হয় নাচ। ভক্তদের ঘাড়ে বাঁশের মাচায় দাঁড়িয়ে মা-ও করেন নাচ! আসলে ভক্তরা নাচ করলে কাঁধে বাঁশ বাঁধা অবস্থায় প্রতিমা নিজেও নেচে ওঠেন। এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন প্রতিমা নিজেই নাচছেন। এই বছরও বিসর্জনের দিন উপস্থিত হতে হবে শান্তিপুরের এই পুজোয়। প্রসঙ্গত, শান্তিপুরে নেমে যে কোনও মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই আপনি পৌঁছে যেতে পারেন বামাকালীর মন্ডপে। তবে এই বিশেষ দিনের জন্য প্রশাসনের তরফ থেকেই বাড়তি তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়।
কালীপুজোর পর অঞ্জলি হয়ে গেলে দেবীর প্রতিমাকে মণ্ডপের বাইরে আনা হয় এবং বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। এই বিশেষ আচারে, প্রতিমাকে একটি বাঁশের মাচায় রাখা হয়। হাজার হাজার ভক্ত সেই মাচাটি কাঁধে তুলে নিয়ে লাফালাফি শুরু করেন। এই প্রবল আন্দোলনের ফলে মনে হয় যেন প্রতিমাটিই নাচছেন। এই নৃত্য ভক্তদের সঙ্গে মায়ের একাত্মতা এবং তাদের মধ্যে থাকা দেবীর শক্তি ও আনন্দের প্রকাশকে নির্দেশ করে। এই ঐতিহ্যবাহী ও উগ্র নৃত্য দেখতে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। এই উৎসবটি আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে এবং এটি শান্তিপুরের একটি অনন্য ঐতিহ্য।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।