
সকল দেব-দেবীর বাহন কোনও না কোনও পশু বা পাখি। একইভাবে, দেবী লক্ষ্মীর বাহন হল পেঁচা। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর পরবর্তী পূর্ণিমাতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উদযাপিত হয়। এই বছর তা ৫ অক্টোবর সোমবার হবে। সম্পদ এবং সমৃদ্ধি পেতে দীপাবলিতে দেবী লক্ষ্মী এবং ভগবান গণেশের পূজা করা হয়। বিশ্বাস অনুসারে, মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ থাকলে তার জীবনে কখনও ধন, সমৃদ্ধির অভাব হয় না। আসুন জেনে নিই কীভাবে পেঁচা হয়ে উঠল দেবী লক্ষ্মীর বাহন, কী রয়েছে এর কারণ।
বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, সনাতন ধর্মের সকল দেবতাই পশু-পাখিকে বাহন হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এর পেছনে রয়েছে অনেক জনপ্রিয় গল্প। কথিত আছে জীবজগৎ সৃষ্টির পর একদিন সকল দেব-দেবী পৃথিবীতে বিচরণ করতে আসেন। তখন পশু-পাখিরা বলল আমাদেরকে বাহন হিসেবে বেছে নিয়ে আশীর্বাদ করুন।
সেই সঙ্গে লক্ষ্মীদেবী বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন, কাকে তার বাহন হিসেবে বেছে নেবেন। লক্ষ্মী যখন একটি বাহন বেছে নেওয়ার বিষয়ে চিন্তা করছিলেন, তখন অন্যান্য পশু-পাখির মধ্যে লড়াই হয়েছিল। এতে লক্ষ্মী সবাইকে শান্ত করে বলেন, প্রতি বছর কোজাগরি পূর্ণিমার দিনে আমি পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করতে আসি। সেদিন আমি তোমাদের একজনকে আমার বাহন করব।
কার্তিক অমাবস্যার দিন সকল পশু-পাখি লক্ষ্মীকে খুঁজতে থাকে। রাত্রিতে লক্ষ্মীদেবী পৃথিবীতে আসার সঙ্গে সঙ্গে পেঁচা তাঁকে রাতের অন্ধকারে দিয়ে পথ দেখিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যায়। তার পর প্রার্থনা করে আমাকে আপনার বাহন হিসেবে গ্রহণ করুন। তখন লক্ষ্মীদেবী তাঁকে সানন্দে নিজের বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন। এছাড়া শষ্যকেও মায়ের রূপে পুজো করা হয়। আর নানা পোকা-মাকড় বা ছোট ছোট ইঁদুর সেই ধান বা শষ্য খেয়ে নষ্ট করে দেয় আর পেঁচা রাতে ভালো দেখতে পায় বলে এগুলি শিকার করে শষ্যের রক্ষা করে এই কারণেও মা লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা বলে মনে করা হয়।