
Mysteries of Amavasya: জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, একটি হিন্দু মাসে ২ টি পক্ষ থাকে, যাদের কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষ বলা হয়। এই উভয় পক্ষই ১৫-১৫ দিনের হয়। শুক্ল পক্ষের শেষ তিথিকে পূর্ণিমা এবং কৃষ্ণ পক্ষের শেষ তিথিকে অমাবস্যা বলা হয়। ধর্মগ্রন্থে অমাবস্যা তিথিকে খুবই বিশেষ বলে মনে করা হয়, এই তিথির সাথে জড়িত অনেক বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যও রয়েছে। অমাবস্যার সাথে অনেক রহস্যও জড়িত, তাই একে রহস্যময় তিথিও বলা হয়। জেনে নিন অমাবস্যার সাথে জড়িত ৫ টি রহস্য…
অমাবস্যার অর্থ কি?
ধর্মগ্রন্থে চন্দ্রের ১৬ টি কলা বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ তম কলার নাম অমা। এ থেকেই অমাবস্যা শব্দের উৎপত্তি। স্কন্দপুরাণে লেখা আছে যে-
অমা ষোড়শভাগেন দেবি প্রোক্তা মহাকলা।
সংস্থিতা পরমা মায়া দেহিনাং দেহধারিণী।।
অর্থ- অমাকে চন্দ্রের মহাকলা বলা হয়, এতে চন্দ্রের সমস্ত ষোলটি কলার শক্তি অন্তর্ভুক্ত। তাই এই কলার ক্ষয় এবং উদয় হয় না।
কে অমাবস্যা তিথির অধিপতি?
ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, অমাবস্যা তিথির অধিপতি পিতৃপুরুষ, তাই এই দিনে পিতৃপুরুষদের শান্তির জন্য তর্পণ, শ্রাদ্ধ এবং পিণ্ডদান ইত্যাদি কাজ করা হয়। পণ্ডিতদের মতে, অমা নামক রশ্মি দিয়েই সূর্য পৃথিবীকে আলোকিত করে। যখন সেই অমা রশ্মিতে চন্দ্র অবস্থান করে তখন সেই রশ্মির মাধ্যমে চন্দ্রের উপরের অংশ থেকে পিতৃপুরুষরা পৃথিবীতে আসেন। তাই এই তিথির অধিপতি পিতৃপুরুষদের বলে মনে করা হয়।
এই দিনে কি ভূত-প্রেতের শক্তি বেড়ে যায়?
অমাবস্যা তিথির সাথে জড়িত একটি বিশ্বাস হল এই দিনে নেতিবাচক শক্তি অর্থাৎ ভূত-প্রেতের শক্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। এর পিছনে বিশ্বাস হল এই দিনে চন্দ্রের রশ্মি পৃথিবীতে আসে না, যার ফলে সাধারণ দিনের তুলনায় অনেক বেশি অন্ধকার থাকে। এই পরিস্থিতি নেতিবাচক শক্তির প্রভাব বাড়িয়ে দেয়, তাই বলা হয় অমাবস্যায় কোনও শ্মশান বা কবরস্থানের কাছ দিয়ে রাতে যাওয়া উচিত নয়। এমন করলে নেতিবাচক শক্তি আমাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
অমাবস্যায় শ্রমিকরা কেন কাজ করে না?
অমাবস্যায় শ্রমিকরাও তাদের কাজ বন্ধ রাখে এবং যন্ত্রের সাথে জড়িত কাজও করা হয় না। এই দিনে মানুষ তাদের যন্ত্র বা সরঞ্জামের পূজা করে। এর পিছনে বিশ্বাস হল এই সমস্ত জিনিসপত্র কেবল আমাদের জীবিকা নির্বাহে সহায়ক নয়, বরং এগুলি থেকে দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা থাকে। অমাবস্যা তিথিতে যখন নেতিবাচক শক্তির প্রভাব বেশি থাকে, তখন এই যন্ত্রগুলি থেকে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এই দিনে যন্ত্রগুলি বন্ধ রাখা হয়।
ভ্রমণেরও নিষেধাজ্ঞা
অমাবস্যার সাথে জড়িত আরও একটি বিশ্বাস হল এই দিনে দূর ভ্রমণে যাওয়া উচিত নয়, নাহলে এই ভ্রমণে ব্যর্থতা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও বেশি থাকে। এছাড়াও এই দিনে চন্দ্রের শক্তি না পাওয়ায় শরীরে জলীয় উপাদানের ভারসাম্য ঠিক থাকে না, যার ফলে এই দিনে নেওয়া সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হতে পারে।
Disclaimer
এই প্রবন্ধে যে তথ্য রয়েছে, সেগুলি জ্যোতিষীদের দ্বারা বলা হয়েছে। আমরা কেবল এই তথ্য আপনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি মাধ্যম। ব্যবহারকারীরা এই তথ্যগুলিকে কেবল তথ্য হিসেবেই বিবেচনা করুন।